জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে ঢাকায় পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মস্থলগামী মানুষ। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর গাড়ি না পেয়ে অনেকে হেঁটে কর্মস্থলে রওনা দিয়েছেন। শনিবার সকালে রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার, মহাখালী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন অনেক যাত্রী। কিন্তু গাড়ির দেখা মিলছে একেবারে কম। এসব গাড়িতে উঠতে যাত্রীদের রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। তবে হুড়োহুড়ি করে বাসে ওঠতে না পেরে বয়স্ক ও নারী-শিশুদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। রাস্তায় চলাচল করা বাসগুলোর চালক ও সহকারীরা বলছেন, শুক্রবার রাতে আকস্মিক জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় রাস্তায় গাড়ি নামাচ্ছেন না পরিবহন মালিকরা। তারা পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। বেসরকারি চাকরিজীবী হাসনাত কাদীর থাকেন রাজধানীর খিলক্ষেতে। তার অফিস তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায়। সকালে রাস্তায় বেরিয়েই তিনি দেখেন গাড়ির সংকট, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর গাড়িতে উঠতে সমর্থ হন তিনি। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রায় আধাঘণ্টা অপেক্ষার পর বাসে ওঠতে পেরেছি। গণপরিবহন সংকটে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন নারী ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে চলন্ত বাসে ওঠতে পারলেও তারা পারছেন না। হাসনাত কাদীরের মতো ক্ষোভপ্রকাশ করে অন্য যাত্রীরা বলছেন, পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোনো আলাপ না করে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মনে হচ্ছে। সেজন্য ভাড়া বাড়ানোয় মালিকরা এভাবে পরিবহন সংকট তৈরি করেছেন। এতে জনসাধারণই ভুগছেন। অথচ আগে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে দাম বাড়ালে হয়তো আজকের এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। জ্বালানির এ দাম বাড়ানোয় শুধু গণপরিবহন খাতে নয়, পণ্যপরিবহনেও ভাড়া বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে পণ্যের দামে। সমন্বয়হীনতার কারণে এসব ক্ষেত্রেও নজিরবিহীন সংকট দেখা দিতে পারে-যোগ করেন তারা। অন্যদিকে, ঢাকার বাইরে অন্য জেলাগুলোতেও পরিবহন সংকটের খবর মিলেছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় শনিবার সকাল থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পরিবহন মালিক সমিতি। তারা জানিয়েছে, জ্বালানির দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ি চলবে না। একই কারণ দেখিয়ে অনেক আন্তঃজেলা পরিবহনও রাস্তায় নামছে না।