ডিজেল, পেট্রল, অকটেনের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল কমে গেছে। শনিবার (৬ আগস্ট) ভোর থেকে দূরপাল্লা ও আঞ্চলিক রুটে গণপরিবহন কম চলার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কর্মস্থলমুখী মানুষদের। মহাসড়কের মিরসরাই অংশের ৩০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে দু’একটি লোকাল ও দূরপাল্লার বাস চলাচল করলেও প্রয়োজনের তুলানায় তা একেবারে কম। শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেখা গেছে, অন্য দিনের তুলনায় বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, পিকআপসহ সব ধরনের যান অনেক কম চলাচল করছে। বারইয়ারহাট-মাদারবাড়ি রুটে চলাচল করা চয়েস, উত্তরা বাস, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করা বিভিন্ন চেয়ারকোচ ও আন্তঃজেলার বিভিন্ন বাসও খুব বেশি চোখে পড়েনি। চট্টগ্রাম শহরে যাওয়ার জন্য মিরসরাই সদরের বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করা চাকরিজীবী নুরুচ্ছালাম বলেন, সকাল ৮টা থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। এখন ৯টা ২০ মিনিট। এখনো বাসে উঠতে পারিনি। দু’একটি বাস এলেও খুব ভিড়, এখানে দাঁড়াচ্ছে না। গত রাতে হটাৎ করে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গণপরিবহন চলাচল কমে গেছে। মহাসড়কের বারইয়ারহাট, মস্তাননগর বিশ্বরোড, ঠাকুরদীঘি, মিঠাছড়া, মিরসরাই সদর, বড়তাকিয়া, হাদিফকিরহাট, নিজামপুর কলেজ, বড়দারোগাহাটসহ সব স্ট্যান্ডে কর্মস্থলমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া বারইয়ারহাট-বড়দারোগাহাট, সীতাকুন্ড রুটে চলাচল করা লেগুনা, সেইফ লাইন পরিবহনের গাড়ি চলাচলও অনেক কমে গেছে। লেগুনা চালক মো. জানে আলম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় নেওয়া ডিজেল থাকায় বড়দারোগাহাট থেকে বারইয়ারহাট যাচ্ছি। এরপর গাড়ি বন্ধ করে দেব। ৮০ টাকার ডিজেল এক লাফে ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা হয়েছে। ভাড়া তো আর বাড়েনি। যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া করতে পারবো না। তার চেয়ে ভালো গাড়ি চালাবো না। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সাংগঠনিকভাবে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে কোনো সীদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় মালিকরা গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। তাদেরও কী করার আছে? লিটারে এক-দুই টাকা বাড়লে একটা কথা ছিলো। এভাবে ৩৪-৪৬ টাকা লিটার প্রতি বেড়েছে। মালিকরা তো লোকসান দিয়ে গাড়ি চালাবে না। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রতি লিটার ডিজেলে দাম বেড়েছে ৩৪, কেরোসিনে ৩৪, অকটেনে ৪৬, পেট্রলে ৪৪ টাকা। দাম বাড়ার পর প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রল ১৩০ টাকায় কিনতে হবে। এর আগে খুচরা মূল্য ছিল প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রল ৮৬ টাকা।