নির্ধারিত সময়ে কর্মী না পাঠানোর দায় মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের : বায়রা
Date : 4-6-2024
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী না পাঠানোর দায় মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের। আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এক সংবাদ সম্মেলন এবং মতবিনিময়সভায় দুই দেশের সরকারের ওপর এ দায় চাপান রিক্রুটিং এজেন্সিদের সংগঠন বায়রার নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বায়রার সাবেক মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্বপন বলেন, ‘গত ৩১ মে পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার ই-ভিসা ইস্যু করেছে। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ৩০ বা ৩১ মে যদি ই-ভিসা ইস্যু করা হয় তাহলে আমরা কিভাবে তালিকা করব? যদি গত ১৫ই মার্চ অথবা মার্চে বন্ধ হওয়ার ঘোষণার পর ই-ভিসা ইস্যু ও অনুমোদন বন্ধ করা হতে তাহলে এই সংকট তৈরি হত না।’
বায়রার এই সাবেক মহাসচিব আরো বলেন, ‘১৬-১৭ হাজার কর্মী যায়নি সেটা আজকের বিষয় না, এটা গত ২২ মাস আগের থেকে বিষয়। এটা অনেক আগে থেকেই সেটেল্ট হচ্ছিল। বছর শেষে যখন ব্যবসা শেষ হলো তখন আমরা বলছি টোটাল ১৭ হাজার কর্মী যেতে পারেনি। ১০১টা এজেন্সি যখন তাদের নম্বর সাবমিট করবে তখনই বলা যাবে আসলে কতজন কর্মী এখনো যাওয়া বাকি আছে। এ ছাড়া সব সময় যতগুলো ক্লিয়ারেন্স হয় ততজন কর্মী যায় কথাটা সত্য নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছে সেই তদন্ত কমিটির চিঠি আমাদেরকেও দিয়েছে। যাতে আমরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করতে পারি। আমরা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সঙ্গে জড়িত রয়েছি। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ সরকার ৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। মালয়েশিয়া সরকার ৪৭টি নিয়োগকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এর যখন মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ অনুমতি নিয়েছে তারপর যখন কালো তালিকাভুক্ত হয়েছে তখন বিএমইটি তাদের ছাড়পত্র দেয়নি। কিন্তু নিয়োগ অনুমতি পাওয়ায় রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো আগে অর্থ নিয়েছে। সুতরাং বিষয়গুলো এখনও অনেক ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছেন তার সঙ্গে বায়রাও সংযুক্ত রয়েছেন। আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে একটি সংখ্যায় পৌঁছতে দেন। আমার মনে হয় ২-৩ দিনের মধ্যে একটি আসল চিত্র পাওয়া যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেট তৈরির দায় দুই দেশের সরকারকে দিয়ে বায়রার সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, ‘১০১ জন ব্যবসা করেছে, তাদের সুযোগ দিয়েছে কে? দুই দেশের মন্ত্রণালয়।’
বায়রার সভাপতি আরো বলেন, ‘এখন আমাদের যে লোকগুলো যেতে পারে নাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি, সরকার চেষ্টা করেছে। আমরা কথা দিলাম, যে লোকগুলো যেতে পারেনি, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কতজন লোক যেতে পারে নাই আমাদের অফিসে এসে যে এজেন্সি তাদের পাঠাতে পারে নাই তাদের নাম লিপিবদ্ধ করব। এজেন্সিকে কত টাকা দিয়েছে সেটাও লিপিবদ্ধ থাকবে। সরকার যদি এদের পাঠাতে ব্যর্থ হয় আমরা এজেন্সি গুলোর কাছ থেকে টাকা আদায় করে কর্মীদের দেওয়ার জন্য বায়রার পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেব।’
সিন্ডিকেট নিয়ে সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, ‘সিন্ডিকেট বলে কোনো শব্দ নেই। ১০১ এজেন্সির মধ্যে সরকারও আছে। যেখানে সরকার আছে সেখানে সিন্ডিকেট নেই। মালয়েশিয়া সরকার যাদের সিলেক্ট করেছে শুধু তারাই কর্মী পাঠিয়েছে।’
বায়রার সাবেক সভাপতি বেনজির আহমদ বলেন, ‘এই যে ২৪ হাজার কোটি টাকা এমপিদের নেতৃত্বে আত্মসাৎ হয়ে গেছে বলা হচ্ছে। এই সমস্ত তথ্য দিয়ে ক্ষতিটা কার হচ্ছে! কোনো ভাবেই আপনারা এটা প্রমাণ করতে পারবে না যে এমপিরা এটা করেছে। কারণ হলো ১০১টা লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আমরা তো মালয়েশিয়ায় যাই নাই, কাউকে বলি নাই যে আমাদের লাইসেন্স দেন। নিয়ম মেনেই সব হয়েছে।’