নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে (৪০) গুলি ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আসামী রাসেল মাহমুদকে বিমান বন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (১ জুন) সকালে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান (পিপিএম) এক সংবাদ সন্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তারকৃত রাসেল মাহমুদ (৪৫) মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ২নং আসামী। সে সদর উপজেলার পৌলানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ২টি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোস্তাফিজ রহমান বলেন, গত ২৮ মে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ভগিরথপুর গ্রামের হাজী ইমাম উদ্দিনের ছেলে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হাসানকে লক্ষ্য করে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেন। উক্ত ঘটনার পর মৃত মাহাবুবুল হাসানের ভাই হাফিজুল্লাহ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১২ জনে নামে মাধবদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অত্র মামলায় রাসেল মাহমুদকে ২নং আসামী করা হয়। ঘটনার পরপরই হত্যার মাস্টার মাইন্ড রাসেল মাহমুদ গত ২৯ মে ভোরে কাতার এয়ারলাইন্স যোগে কাতার হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ খবর পেয়ে মাধবদী থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ টিম ঢাকা আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পুলিশ পৌঁছার আগেই আসামী রাসেল মাহমুদকে বহন করা কাতার এয়ারলাইন্সের বিমানটি কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে জেলা পুলিশ সুপার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে কাতার ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় দীর্ঘ ১২ ঘন্টা পর ফিরতি ফ্লাইটে রাসেল মাহমুদকে কাতার থেকে ঢাকা বিমান বন্দরে ফিরিয়ে আনা হয়।
পরে তাকে শুক্রবার ভোরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি’র নিকট হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের যৌথ টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে আজ আদালতে উপস্থিত করে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে এবং বাকি আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।
গত মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার মেহেরপাড়ার ভগিরথপুর শাহী ঈদগাহ (ঢাকা-সিলেট) মহাসড়কের পাশে মাহবুবুল হাসান তার ব্যক্তিগত অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আগে থেকে উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে প্রথমে গুলি করে, পরে কুপিয়ে হত্যা করেন। এসময় মাহবুবুলের সহযোগী পাপ্পু ও ফরহাদ নামে আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আশংকা অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাসেল মাহমুদ ছাড়াও হত্যার পর এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামিরা হলেন- মাধবদী থানার পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মো: হিমেল মিয়া (৪৩), জুয়েল মিয়া (৩৯), মো: নবেল (২৮), একই এলাকার কদম আলীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৬৫), টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার খানপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো: রাব্বি (১৯), কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী থানার উত্তর ভরতের ছডা এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে ও মাধবদীর ভগিরথপুর টেক্সটাইল মিলস এলাকার বর্তমান বাসিন্দা মো: মিঠু (৩৫) ও মাধবদী থানার কবিরাজপুর এলাকার মো: জমির উদ্দিনের ছেলে মো: লিপু মিয়া (৪৫)।