স্টাফ রিপোর্টার
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায়ধীন সওজ’র নওগাঁ জেলার উপ--সহকারী প্রকৌশলী মো. রায়হান মিয়া অবৈধভাবে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি, সরকারি রাস্তার কাজ না করে ঠিকাদারদের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে ভাগবাটোরা মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রায়হান। সরকারি টাকা আত্মসাৎ, এবং ঘুষ দুর্নীতি মাধ্যমে অবৈধভাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, জমিসহ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন উপ প্রকৌশলী রায়হান মিয়া । তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর পিছনে রহস্য কি? নওগাঁ জেলার (সওজ) বিভাগের উপ --সহকারী প্রকৌশলী রায়হান মিয়া চাকুরির শুরুর কিছুদিন পর থেকে তকদির বাণিজ্য শুরু করেন । আস্তে আস্তে এক পর্যায়ে ঘুষ দুর্নীতি সরকারি রাস্তার ঠিকঠাক মতো কাজ না করি ঠিকাদারদের মাধ্যমে সরকারি টাকা উত্তোলন করে ভাগ বাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করতেন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নওগাঁ জেলার সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করি দিনের পর দিন দুর্নীতি-- অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন রায়হান মিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, রায়হানের সিন্ডিকেটের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগটি জিম্মি হয়ে আছে। এই বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা যেকোনো টেন্ডারের কাজ ও মেরামতের কাজসহ বিভিন্ন কাজের তার দ্বারস্থ হয়। উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তারা রায়হানের মাধ্যমে অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঠিকাদারাও এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। এতে করে সব দিকে লাভবান হচ্ছেন রায়হান। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, রায়হানের নিয়োজিত ঠিকাদার ছাড়া অন্য কোন ঠিকাদার এখানে কাজ করতে পারে না। তার কারণ হচ্ছে ওই ঠিকাদারদের মাধ্যমে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তার শক্তিশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে মারধর বা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। রায়হান মিয়া অল্প দিনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এলাকাবাসীরা তাকে টাকার কুমির বলে চিনে। দুর্নীতিবাজ ,ঘুষখোর, সরকারের টাকা আত্মসাৎকারী উপ--সহকারি প্রকৌশলী রায়হান মিয়ার বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার সরহাট্টা দুর্গাপুর গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তাব আলী ছেলে। এলাকাবাসীদের অভিযোগের মাধ্যমে জানা গেছে, চাকুরির আগে তার বাবা সংসার চালাইতে হিমশিম খেতে। চাকরি পাওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষকে মানুষ মনে করে কোন পরোয়ার করে না । এলাকাতে জমিজমা সহ যেকোনো জিনিস বেচাকেনা করার সময় তার জন্য অন্য কেউ কিনতে পারেনা সে সবসময় টাকার গরম দেখিয়ে সব জিনিস ক্রয় করে। তাই এলাকার মানুষ রায়হান মিয়াকে টাকার কুমির বলে আখ্যায়িত দিয়েছে। এই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রায়হান মিয়া। এমন একটি ঘটনা ঘটে যার সাক্ষী এলাকাবাসী, দুর্গাপুর বাজারের আজগর আলী ও বকুল মিয়া জমি বিক্রি করতে চাইলে এলাকার সাধারণ বাঁশি জমিটি ক্রয় করার চিন্তা করে। তারা দরদামো করে এক পর্যায়ে টাকার কুমির রায়হান মিয়া দামের দিগুন দিয়ে ওই জমিটি ক্রয় করে। তখনই এলাকাবাসী তার প্রতি ঘৃনা চোখে দেখেন। এদিকে চলতি বছরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নওগাঁ সদর জেলার মো, সবুর হোসেন নামের ব্যক্তি নওগাঁ জেলার (সওজ) উপ --সহকারী প্রকৌশলী মো. রায়হান মিয়ার বিরুদ্ধে সড়ক জনপদ ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাছে লিখিতভাবে তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের মাধ্যমে জানা গেছে, রায়হান মিয়া চাকরির শুরু থেকে তদবির বাণিজ্য, ঘুষ দুর্নীতি ও অবৈধভাবে সরকারি টাকা আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ ভাবি অর্থ উপার্জন করে বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, গাড়ি সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি সিন্ডিকেট করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়েছেন। লিখিত অভিযোগের আরও উল্লেখ রয়েছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের করবর্ষে আয়কর রিটার্ন মূলে জানাযায়, ২০৩ শতাংশ জমি যার মূল্য দেখিয়েছেন ১০ লাখ ১২ হাজার টাকা। এবং তিনি একটি এফ জেড -ভি -৩, যাহার রেজিস্ট্রেশন নম্বর নওগাঁ-- ল--১২১৬/৮১ যার মূল্য দেখিয়েছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। ৪১ ভরি স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন এক লাখ ৫০হাজার টাকা । এছাড়াও তার বহিঃর্ভূত নগদ অর্থ ও তহবিল প্রদর্শন করেছেন ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৫৫৪ টাকা। তিনি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের অর্থবছরের তার নিকট নিট সম্পদ আয়কর নথিতে প্রদর্শন করেছেন ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৪ টাকা। উপরোক্ত অর্থ ছাড়াও এর বাইরে আরো অনেক সম্পদের মালিক তিনি। সেগুলো তার স্ত্রীর নামে আত্মীয়-স্বজনের নামে অবৈধভাবে সম্পদ রেখেছেন। এইসব সম্পদ ঘুষ দুর্নীতি তদবির বাণিজ্য ও সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে উপার্জন করেছেন। কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রায়হান মিয়া। অভিযোগে আরো বলেছেন, তার বিরুদ্ধে কমিশন ও নিজস্ব পছন্দের ঠিকাদার ছাড়া তিনি কোনো কাজ প্রদান করেন না। তিনি আরও কিছু দুর্নীতি পরায়ন নির্বাহী প্রকৌশলী ও অফিস কর্মকর্তা দ্বারা নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিয়োগের তদবিরও করতেন । এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে রায়হান মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এত সম্পদের মালিক নই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কেউ হইতো অপপ্রচার করছে । আওয়ামী লীগের সরকারের আমলে চাকুরি পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের দিকনির্দেশনের মোতাবেক রায়হান মিয়া কাজ করতো । রায়হান মিয়া ও তার সিন্ডিকেট বিষয়ে সঠিক তদন্ত করলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে। যার সংসারে চলার মত তেমন কিছু ছিল না এখন সে অবৈধভাবে অটল সম্পদের মালিক হয়েছেন। একজন উপ-- সহকারি প্রকৌশলী চাকুরি পেয়ে অল্প দিনের মধ্যে এত সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন এই নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। রায়হান মিয়া কি আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়েছেন। তাই অভিযোগকারী ও এলাকাবাসীদের আকুল আবেদন সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানাচ্ছি যে উপরোক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন ।
নিউজ সোর্স -আজকের আলোকিত সকাল ও দৈনিক সংলাপ
|