নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর অভিযান এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান-বনানী। এই এলাকাগুলোতে রয়েছে অভিজাত মানের হোটেল, কূটনৈতিক মিশন সহ হেয়ার কাটিং সেলুন, বিউটি পার্লার এবং স্পা সেন্টারের মতো অসংখ্য ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কাছ থেকে বৈধ লাইসেন্স নিয়েই এসব এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে ভুঁইফোড় চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
জানা যায় ব্যবসায়ীদের উপর ভয় ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ আলাউদ্দিন গ্রুপের বিরুদ্ধে। তার গ্রুপে রয়েছে জহিরুল, বাদশা, মাসুম, জুয়েল রানা। এসব সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রাণের ভয়ে কেউ মুখ না খোলায় দিনে দিনে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। বর্তমানে তারা বিশাল বাইকের মহরা নিয়ে চলে গুলশান বনানীতে। জানা যায় তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একাধিকবার মৌখিক নোটিশ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করার উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মালিক ইমরান, মনজুরুল, শাহেনা সুলতানা, মনি বেগম, তোফা, নূর হোসেন, আব্দুল মান্নান, নিজাম, সুলাইমান, আবুল খায়ের, কোহিনুর বেগম, জিয়া, বাবুল, বীরেন মন্ডল, রোজিনা বেগমসহ অর্ধ্ব শতাধিক ভুক্তভোগী।
গুলশান থানা এলাকাতে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে এই দুষ্ট চক্র। ৫ আগস্ট সরকার পতন হওয়ার পর এরা দলের পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেমন, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, দোকনে লুটপাট, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাতের দোকান থেকে চাঁদা উঠানো থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যে তারা করছে না। মাদক সেবন করে রাস্তায় মাতাল হয়ে বিভিন্ন বয়সের যাতায়াতরত নারীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগও রয়েছে এই দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে। দলের নাম ব্যবহার করে এ সকল অপকর্ম করছে আলাউদ্দিন গ্রুপ। এমন প্রশ্ন এখন সচেতন মহলের। তবে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং চাঁদাবাজি সহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল আছে বিএনপির হাইকমান্ড। শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ইতি মধ্যেই দল থেকে বহিস্কারও হয়েছে অনেকে। দলটির নিতি নির্ধারকরা বারবার নেতা কর্মীদের হুশিয়ার করে বলছে, এরকম কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ড সাথে দলের কেউ জড়িত হবেন না। জড়িত থাকলে তাকে দল থেকে বহিস্কারের পাশাপাশি আইনের হাতে তুলে দেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার পরেও দলের শুনাম ও ভাবমূর্তী নষ্ট করতে একটি চক্র অপচেষ্টা করছে বলে মনে করছেন একাধিক সিনিয়র হাই কমান্ডের নেতৃবৃন্দ। বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, এরা ভয়ঙ্কর দুষ্কৃতিকারী দলের কেউ নন স্বৈরচার আওয়ামীলীগের এজেন্ডা দলের ভেতর অনুপ্রবেশকারী নব্য বিএনপি দলের শুনাম নষ্ট করতে চায়। এরা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫ আগষ্ট সরকার পতন হওয়ার পর এরা গুলশান বনানী এলাকতে দলের পরিচয় দিয়ে নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে আলাউদ্দিন গ্রুপ। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এমন অভিযোগ উঠেছে।
গুলশানের বেশ কয়েকজন ক্ষুদে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সরজমিনে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন বিএনপির কর্মীর পরিচয় ব্যবহার করে আমাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে তারা। এমন সব বিএনপির নেতাদের নাম বলে, যার নাম কেউ কখনও শোনেনি। কিন্তু তারা বড় মাপের বিএনপির কর্মী হিসেবে নিজের পরিচয় দেন। এই কথিত চাঁদাবাজদের ভাষ্য মতে, তাদের কথা দেশের পুলিশ থেকে শুরু করে সকলে শোনে।
এই নাম সর্বস্ব জন্য প্রকৃত নেতা কর্মীদের অনেক সময় হয়রানির মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ ধরণের চাঁদাবাজদের চাঁদাবাজি অচিরে বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে প্রকৃত নেতা কর্মীর পথ তৈরিতে সহায়তার আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ীরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, আলাউদ্দিন গ্রুপের সঠিক তথ্য ও প্রমান পেলে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো। তাছাড়া বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যদি দখল, চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি আরো বলেন আপনাদের মাধ্যমে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে কোন অপকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে সেই দায় দল বা আমি নেবো না। আমি দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করবো এবং তাদের বিচারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবো।
সব শেষে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
|