চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে থাইল্যান্ডে গিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুর্বল সেবা ও দায়িত্বহীনতায় চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন রাজধানীর মাটিকাটা এলাকার বাসিন্দা মো. সাফায়েত হোসেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এভাবে যাত্রীদের কষ্ট দিয়ে বিমান বাংলাদেশ কখনোই সফল হবে না।’
কালের কণ্ঠকে সাফায়েত হোসেন জানান, গত ২৭ জুন তিনি ও তার স্ত্রী চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমান বাংলাদেশের টিকিট কাটেন। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ফ্লাইট বিজি৩৮৮ সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
তবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বোর্ডিং পাস নিতে গেলে জানানো হয়, ফ্লাইট এক ঘণ্টা দেরিতে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ছাড়বে।
কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বিমান ছাড়েনি। যাত্রীদের জানানো হয় ‘টেকনিক্যাল সমস্যার’ কারণে ফ্লাইট বিলম্ব হচ্ছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে, বিকেল ৪টার দিকে ফ্লাইট ঢাকা ত্যাগ করে।
সেদিনের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোগী নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এভাবে বসে থাকতে হয়েছে। এ কষ্টের কোনো সীমা ছিল না।’
এতকিছুর পর ৫ জুলাই ফিরতি ফ্লাইটে (বিজি৩৮৯) ঢাকা ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। নির্ধারিত সময় ছিল বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট, ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে।
কিন্তু হঠাৎ করে ‘আলিশা’ নামে বিমান বাংলাদেশ অফিসের এক কর্মকর্তা ফোন করে জানিয়ে দেন যে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং তাদের পরদিন একই সময়ে ফিরতে হবে।
সাফায়েত হোসেন বলেন, ‘আমি জানতে চাইলাম হোটেল ভাড়া, ওষুধ, খাওয়া-সব খরচ আমরা কীভাবে ম্যানেজ করব। বিশেষ করে চিকিৎসা করাতে আসা অনেক রোগীর কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকে না। কিন্তু উত্তর আসলো শুধু- ‘দুঃখিত’। এতেই কি দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়?’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের নাগরিক, বাংলাদেশের বিমানকে ভালোবেসেই টিকিট কেটেছি।
কিন্তু এভাবে বারবার কষ্ট পেয়ে আর কে টাকা দিয়ে এ সেবা নেবে? রোগীদের জন্যও এখানে কোনো সহানুভূতি নেই। এভাবে চললে বিমান বাংলাদেশ কখনোই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।’
এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, অনিবার্য কারণে আজকের (৫ জুলাই) ব্যাংকক-ঢাকা ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদেরকে হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে যাত্রীদের দাবি, যাত্রী সেবায় গুণগত মান ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত না হলে আস্থা হারাবে দেশের জাতীয় এয়ারলাইনস।