ঢাকা,সোমবার,৫ মাঘ ১৪২৭,১৮,জানুয়ারী,২০২১
|
|
|
|
|
|
|
|
|
ডেঙ্গু ও নিরাময়ে হোমিওপ্যাথিতে সর্বোত্তম ব্যবস্থা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী‘র বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণরোগ প্রতিরোধ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সুপ্রিয় দেশবাসী এবং সুধীবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সময়োপযোগী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন একটি অত্যাশ্চার্য্য আবিস্কার নিয়ে। আর তা হলো ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধক এবং ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে।
ইদানিং ডেঙ্গুর প্রকোপে যখন সারাদেশবাসী আতংকগ্রস্থ, ঠিক এই মুহূর্তে সুদীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণ এবং বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মহান সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় আমি এই সফলতায় উত্তীর্ণ হয়েছি যে, হোমিওপ্যাথি শাস্ত্র অনুযায়ী সিম্পটমিক (ঝুসঢ়ঃড়সরপ) বিশেষ কিছু মেডিসিন প্রয়োগের ফলে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই পূর্ব হতেই যদি আমার গবেষণা লদ্ধ মেডিসিন প্রয়োগ করা যায় তাহলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কোন ঝুঁকি থাকেনা। আর পূর্ব হইতে যদি কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে ডেঙ্গু জ্বর হয়েই যায়। তাহলে ও চিন্তার কোন কারণ নেই। আমার রিসার্সকৃত ডেঙ্গু জ্বরের মহৌষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, ঐ অবস্থা হতেই রোগীর অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে। রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে। ডেঙ্গুু জ্বর হলে রোগীর চষধঃবষবঃব দ্রুত কমতে থাকে, মাথা ঘোরা, বমি ভাব ও বমি, অরুচি, ক্ষুধামন্দা, খেতে না পারা ইত্যাদি উপস্বর্গগুলো দেখা দেয়। তাহা আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে খুব তাড়াতাড়ি দুরীভুত হয় এবং রোগী দ্রুতই সুস্থ্যতা লাভ করে। ডেঙ্গু রোগীর বিপদজনক অবস্থা হলো হেমোরোজিক অবস্থা। এই অবস্থায় রোগীর চোখ মুখ লাল, থমথমে ভাব, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, অনেক সময় বমির সাথে রক্ত আসা, ইন্টারনাল রক্তক্ষরন। এই অবস্থায়ও যদি সঠিক ভাবে আমার এই ঔষধ প্রয়োগ করা যায়, তাহলেও সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় (রহমতে) রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠে। আমার এই সুদীর্ঘ পরিশ্রম ও গবেষণার ফসল যদি আমি লোকহিতার্থে জনগনের কল্যাণে ব্যাপক ভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলেই আমার জীবন স্বার্থক বলে মনে করব। ইতি মধ্যেই আমি মানিকগঞ্জ শহরে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী চিকিৎসা করে প্রায় ৯৯% সফল হয়েছি। তাই আমার এই আবিস্কার দ্বারা সমগ্র দেশবাসী তথা সমগ্র বিশ্ববাসীর সেবা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি যে, আমার এই আবিস্কারের সফলতা প্রমাণের জন্য আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুযোগ দেওয়া হোক। ডেঙ্গু রোগী যেখানে বেশী ভর্তি আছে সেই রকম বড় বড় কয়েকটি মেডিকেলে আমার ঔষধ প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়ে ফলাফল যাচাই করা হোক। রোগী হসপিটালে ভর্তি থাকবে। হসপিটালের কেয়ারেই থাকবে, হসপিটালের যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাই দিবে, তাতেও সমস্যা নেই। ঐ চিকিৎসার সাথে শুধু মাত্র আমার ঔষধ প্রয়োগ করা হবে এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যেখানে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীকে শুধু মাত্র প্যারাসিটামল ব্যতিত কোন প্রকার অহঃরনরড়ঃরপ বা অংঢ়রৎরহ জাতীয় কোন ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে না।
আর এই কারণেই, রোগী খারাপের দিকে গেলেও তাকে বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত কোন ব্যবস্থা অবলম্বন করা সম্ভব হয় না। সেখানে আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, সেই অবস্থা হতেই আরোগ্য লাভ করবে। এটাতো হবে অত্যাশ্চার্য্য ভাবে রোগীর নতুন জীবন ফিরে পাওয়া।
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশের সমস্ত ডাক্তারবৃন্দ এবং সমগ্র দেশবাসির নিকট আমার আকুল আবেদন আপনারা সকলেই আমার চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ করে পর্যবেক্ষণ করে, ফলাফল যাচাই করা হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট আমার এই আবেদন আপনারা আমার এই চিকিৎসার সফলতা প্রমাণ করার লক্ষ্যে আপনাদের নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বড় বড় হসপিটালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় আমাকে সুযোগ দান করা হোক, সফলতার প্রমাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। যেখানে কয়েক হাজার ডেঙ্গু আক্রান্তরোগী রোগ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। অনেক রোগী মারাও যাচ্ছে। সেখানে এত ভাল একটা চিকিৎসা পদ্ধতি মানব কল্যাণে গ্রহণ করা হবে একটি অতি মহৎ কাজ। মানুষ হিসাবে অপর একজন মানুষের কল্যাণ কামনাই তো মানুষের মহত্ব্যের পরিচয়। এছাড়া অধিক মশক কবলিত অঞ্চল চিহ্নিত করে আমার ডেঙ্গু প্রতিরোধক ঔষধ প্রয়োগ করে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হোক। যেখানে পূর্বে অধিক পরিমানে মশক বাহিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হইত, আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে সেখানে আল্লাহর রহমতে উল্লেখযোগ্য হারে মশক বাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে। ইহা আমার বহুবার পরিক্ষীত। তাই আমার এই আবিষ্কারকে তুচ্ছ না করে, যথোপযুক্তভাবে প্রয়োগ করে ফলাফল যাচাই করে মানব কল্যানে ব্যাপকভাবে প্রচার এবং ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তাই কারো সাথে বিরোধ নয়, যদি মানুষের কল্যাণ কামনাই মানব ধর্ম হয় তাহলে অত্যন্ত ভাল পার্শ্ব প্রতিক্রীয়াহীন সফল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি প্রমাণ করে গ্রহণ করলে অবশ্যই সেটা মহৎ কর্ম হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়কে আমি মহান সৃষ্টিকর্তার উপর পূর্নআস্থা ও বিশ্বাস রেখে আশ্বস্থ্য করতে চাই যে সমগ্র বাংলাদেশ হতে ডেঙ্গু নির্মূলের জন্য আমার এই আবিষ্কার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ।
বিনীত নিবেদক
(ডাঃ পিকে হালদার)
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত
৭৬, শহীদ রফিক সড়ক, মানিকগঞ্জ।
মোবাইল- ০১৭১৮৬২০৫৫০, ০১৬৮৬৭৮৫৪৫৫
ঊসধরষ- ফৎঢ়শযধষফবৎ২০১১@মসধরষ.পড়স
|
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সুপ্রিয় দেশবাসী এবং সুধীবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সময়োপযোগী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন একটি অত্যাশ্চার্য্য আবিস্কার নিয়ে। আর তা হলো ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধক এবং ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে।
ইদানিং ডেঙ্গুর প্রকোপে যখন সারাদেশবাসী আতংকগ্রস্থ, ঠিক এই মুহূর্তে সুদীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণ এবং বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মহান সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় আমি এই সফলতায় উত্তীর্ণ হয়েছি যে, হোমিওপ্যাথি শাস্ত্র অনুযায়ী সিম্পটমিক (ঝুসঢ়ঃড়সরপ) বিশেষ কিছু মেডিসিন প্রয়োগের ফলে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই পূর্ব হতেই যদি আমার গবেষণা লদ্ধ মেডিসিন প্রয়োগ করা যায় তাহলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কোন ঝুঁকি থাকেনা। আর পূর্ব হইতে যদি কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে ডেঙ্গু জ্বর হয়েই যায়। তাহলে ও চিন্তার কোন কারণ নেই। আমার রিসার্সকৃত ডেঙ্গু জ্বরের মহৌষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, ঐ অবস্থা হতেই রোগীর অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে। রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে। ডেঙ্গুু জ্বর হলে রোগীর চষধঃবষবঃব দ্রুত কমতে থাকে, মাথা ঘোরা, বমি ভাব ও বমি, অরুচি, ক্ষুধামন্দা, খেতে না পারা ইত্যাদি উপস্বর্গগুলো দেখা দেয়। তাহা আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে খুব তাড়াতাড়ি দুরীভুত হয় এবং রোগী দ্রুতই সুস্থ্যতা লাভ করে। ডেঙ্গু রোগীর বিপদজনক অবস্থা হলো হেমোরোজিক অবস্থা। এই অবস্থায় রোগীর চোখ মুখ লাল, থমথমে ভাব, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, অনেক সময় বমির সাথে রক্ত আসা, ইন্টারনাল রক্তক্ষরন। এই অবস্থায়ও যদি সঠিক ভাবে আমার এই ঔষধ প্রয়োগ করা যায়, তাহলেও সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় (রহমতে) রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠে। আমার এই সুদীর্ঘ পরিশ্রম ও গবেষণার ফসল যদি আমি লোকহিতার্থে জনগনের কল্যাণে ব্যাপক ভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলেই আমার জীবন স্বার্থক বলে মনে করব। ইতি মধ্যেই আমি মানিকগঞ্জ শহরে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী চিকিৎসা করে প্রায় ৯৯% সফল হয়েছি। তাই আমার এই আবিস্কার দ্বারা সমগ্র দেশবাসী তথা সমগ্র বিশ্ববাসীর সেবা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি যে, আমার এই আবিস্কারের সফলতা প্রমাণের জন্য আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুযোগ দেওয়া হোক। ডেঙ্গু রোগী যেখানে বেশী ভর্তি আছে সেই রকম বড় বড় কয়েকটি মেডিকেলে আমার ঔষধ প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়ে ফলাফল যাচাই করা হোক। রোগী হসপিটালে ভর্তি থাকবে। হসপিটালের কেয়ারেই থাকবে, হসপিটালের যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাই দিবে, তাতেও সমস্যা নেই। ঐ চিকিৎসার সাথে শুধু মাত্র আমার ঔষধ প্রয়োগ করা হবে এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যেখানে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীকে শুধু মাত্র প্যারাসিটামল ব্যতিত কোন প্রকার অহঃরনরড়ঃরপ বা অংঢ়রৎরহ জাতীয় কোন ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে না।
আর এই কারণেই, রোগী খারাপের দিকে গেলেও তাকে বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত কোন ব্যবস্থা অবলম্বন করা সম্ভব হয় না। সেখানে আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, সেই অবস্থা হতেই আরোগ্য লাভ করবে। এটাতো হবে অত্যাশ্চার্য্য ভাবে রোগীর নতুন জীবন ফিরে পাওয়া।
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশের সমস্ত ডাক্তারবৃন্দ এবং সমগ্র দেশবাসির নিকট আমার আকুল আবেদন আপনারা সকলেই আমার চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ করে পর্যবেক্ষণ করে, ফলাফল যাচাই করা হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট আমার এই আবেদন আপনারা আমার এই চিকিৎসার সফলতা প্রমাণ করার লক্ষ্যে আপনাদের নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বড় বড় হসপিটালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় আমাকে সুযোগ দান করা হোক, সফলতার প্রমাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। যেখানে কয়েক হাজার ডেঙ্গু আক্রান্তরোগী রোগ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। অনেক রোগী মারাও যাচ্ছে। সেখানে এত ভাল একটা চিকিৎসা পদ্ধতি মানব কল্যাণে গ্রহণ করা হবে একটি অতি মহৎ কাজ। মানুষ হিসাবে অপর একজন মানুষের কল্যাণ কামনাই তো মানুষের মহত্ব্যের পরিচয়। এছাড়া অধিক মশক কবলিত অঞ্চল চিহ্নিত করে আমার ডেঙ্গু প্রতিরোধক ঔষধ প্রয়োগ করে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হোক। যেখানে পূর্বে অধিক পরিমানে মশক বাহিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হইত, আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে সেখানে আল্লাহর রহমতে উল্লেখযোগ্য হারে মশক বাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে। ইহা আমার বহুবার পরিক্ষীত। তাই আমার এই আবিষ্কারকে তুচ্ছ না করে, যথোপযুক্তভাবে প্রয়োগ করে ফলাফল যাচাই করে মানব কল্যানে ব্যাপকভাবে প্রচার এবং ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তাই কারো সাথে বিরোধ নয়, যদি মানুষের কল্যাণ কামনাই মানব ধর্ম হয় তাহলে অত্যন্ত ভাল পার্শ্ব প্রতিক্রীয়াহীন সফল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি প্রমাণ করে গ্রহণ করলে অবশ্যই সেটা মহৎ কর্ম হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়কে আমি মহান সৃষ্টিকর্তার উপর পূর্নআস্থা ও বিশ্বাস রেখে আশ্বস্থ্য করতে চাই যে সমগ্র বাংলাদেশ হতে ডেঙ্গু নির্মূলের জন্য আমার এই আবিষ্কার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ।
বিনীত নিবেদক
(ডাঃ পিকে হালদার)
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত
৭৬, শহীদ রফিক সড়ক, মানিকগঞ্জ।
মোবাইল- ০১৭১৮৬২০৫৫০, ০১৬৮৬৭৮৫৪৫৫
ঊসধরষ- ফৎঢ়শযধষফবৎ২০১১@মসধরষ.পড়স
|
|
|
|
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সুপ্রিয় দেশবাসী এবং সুধীবৃন্দ আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সময়োপযোগী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন একটি অত্যাশ্চার্য্য আবিস্কার নিয়ে। আর তা হলো ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধক এবং ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে।
ইদানিং ডেঙ্গুর প্রকোপে যখন সারাদেশবাসী আতংকগ্রস্থ, ঠিক এই মুহূর্তে সুদীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণ এবং বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মহান সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় আমি এই সফলতায় উত্তীর্ণ হয়েছি যে, হোমিওপ্যাথি শাস্ত্র অনুযায়ী সিম্পটমিক (ঝুসঢ়ঃড়সরপ) বিশেষ কিছু মেডিসিন প্রয়োগের ফলে এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই পূর্ব হতেই যদি আমার গবেষণা লদ্ধ মেডিসিন প্রয়োগ করা যায় তাহলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার কোন ঝুঁকি থাকেনা। আর পূর্ব হইতে যদি কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে ডেঙ্গু জ্বর হয়েই যায়। তাহলে ও চিন্তার কোন কারণ নেই। আমার রিসার্সকৃত ডেঙ্গু জ্বরের মহৌষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, ঐ অবস্থা হতেই রোগীর অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে। রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে। ডেঙ্গুু জ্বর হলে রোগীর চষধঃবষবঃব দ্রুত কমতে থাকে, মাথা ঘোরা, বমি ভাব ও বমি, অরুচি, ক্ষুধামন্দা, খেতে না পারা ইত্যাদি উপস্বর্গগুলো দেখা দেয়। তাহা আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে খুব তাড়াতাড়ি দুরীভুত হয় এবং রোগী দ্রুতই সুস্থ্যতা লাভ করে। ডেঙ্গু রোগীর বিপদজনক অবস্থা হলো হেমোরোজিক অবস্থা। এই অবস্থায় রোগীর চোখ মুখ লাল, থমথমে ভাব, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, অনেক সময় বমির সাথে রক্ত আসা, ইন্টারনাল রক্তক্ষরন। এই অবস্থায়ও যদি সঠিক ভাবে আমার এই ঔষধ প্রয়োগ করা যায়, তাহলেও সৃষ্টি কর্তার অশেষ কৃপায় (রহমতে) রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠে। আমার এই সুদীর্ঘ পরিশ্রম ও গবেষণার ফসল যদি আমি লোকহিতার্থে জনগনের কল্যাণে ব্যাপক ভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলেই আমার জীবন স্বার্থক বলে মনে করব। ইতি মধ্যেই আমি মানিকগঞ্জ শহরে প্রাইভেট চেম্বারে রোগী চিকিৎসা করে প্রায় ৯৯% সফল হয়েছি। তাই আমার এই আবিস্কার দ্বারা সমগ্র দেশবাসী তথা সমগ্র বিশ্ববাসীর সেবা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি যে, আমার এই আবিস্কারের সফলতা প্রমাণের জন্য আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুযোগ দেওয়া হোক। ডেঙ্গু রোগী যেখানে বেশী ভর্তি আছে সেই রকম বড় বড় কয়েকটি মেডিকেলে আমার ঔষধ প্রয়োগ করার সুযোগ দিয়ে ফলাফল যাচাই করা হোক। রোগী হসপিটালে ভর্তি থাকবে। হসপিটালের কেয়ারেই থাকবে, হসপিটালের যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাই দিবে, তাতেও সমস্যা নেই। ঐ চিকিৎসার সাথে শুধু মাত্র আমার ঔষধ প্রয়োগ করা হবে এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যেখানে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীকে শুধু মাত্র প্যারাসিটামল ব্যতিত কোন প্রকার অহঃরনরড়ঃরপ বা অংঢ়রৎরহ জাতীয় কোন ঔষধ প্রয়োগ করা যাবে না।
আর এই কারণেই, রোগী খারাপের দিকে গেলেও তাকে বাঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত কোন ব্যবস্থা অবলম্বন করা সম্ভব হয় না। সেখানে আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে রোগী যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, সেই অবস্থা হতেই আরোগ্য লাভ করবে। এটাতো হবে অত্যাশ্চার্য্য ভাবে রোগীর নতুন জীবন ফিরে পাওয়া।
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশের সমস্ত ডাক্তারবৃন্দ এবং সমগ্র দেশবাসির নিকট আমার আকুল আবেদন আপনারা সকলেই আমার চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ করে পর্যবেক্ষণ করে, ফলাফল যাচাই করা হোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট আমার এই আবেদন আপনারা আমার এই চিকিৎসার সফলতা প্রমাণ করার লক্ষ্যে আপনাদের নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বড় বড় হসপিটালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় আমাকে সুযোগ দান করা হোক, সফলতার প্রমাণ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। যেখানে কয়েক হাজার ডেঙ্গু আক্রান্তরোগী রোগ যন্ত্রণায় ছটফট করছে। অনেক রোগী মারাও যাচ্ছে। সেখানে এত ভাল একটা চিকিৎসা পদ্ধতি মানব কল্যাণে গ্রহণ করা হবে একটি অতি মহৎ কাজ। মানুষ হিসাবে অপর একজন মানুষের কল্যাণ কামনাই তো মানুষের মহত্ব্যের পরিচয়। এছাড়া অধিক মশক কবলিত অঞ্চল চিহ্নিত করে আমার ডেঙ্গু প্রতিরোধক ঔষধ প্রয়োগ করে ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হোক। যেখানে পূর্বে অধিক পরিমানে মশক বাহিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হইত, আমার এই ঔষধ প্রয়োগের ফলে সেখানে আল্লাহর রহমতে উল্লেখযোগ্য হারে মশক বাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে। ইহা আমার বহুবার পরিক্ষীত। তাই আমার এই আবিষ্কারকে তুচ্ছ না করে, যথোপযুক্তভাবে প্রয়োগ করে ফলাফল যাচাই করে মানব কল্যানে ব্যাপকভাবে প্রচার এবং ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তাই কারো সাথে বিরোধ নয়, যদি মানুষের কল্যাণ কামনাই মানব ধর্ম হয় তাহলে অত্যন্ত ভাল পার্শ্ব প্রতিক্রীয়াহীন সফল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি প্রমাণ করে গ্রহণ করলে অবশ্যই সেটা মহৎ কর্ম হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়কে আমি মহান সৃষ্টিকর্তার উপর পূর্নআস্থা ও বিশ্বাস রেখে আশ্বস্থ্য করতে চাই যে সমগ্র বাংলাদেশ হতে ডেঙ্গু নির্মূলের জন্য আমার এই আবিষ্কার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাল্লাহ।
বিনীত নিবেদক
(ডাঃ পিকে হালদার)
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত
৭৬, শহীদ রফিক সড়ক, মানিকগঞ্জ।
মোবাইল- ০১৭১৮৬২০৫৫০, ০১৬৮৬৭৮৫৪৫৫
ঊসধরষ- ফৎঢ়শযধষফবৎ২০১১@মসধরষ.পড়স
|
|
|
|
স্মৃতিময় ভট্টাচার্য্য
রাজধানীর অধিকাংশ অফিসই ছুটি হয়ে গেছে। বাসস্ট্যান্ডে হাজারো জনতার ঢল। এদিকে গণপরিবহণে উপচেপড়া ভীড় তার উপর যানবাহনের সøথ গতিতে রাজপথ যেন বন্ধ হয়ে আছে। কীভাবে বাসস্থানে পৌঁছাবে এ নিয়ে ব্যস্ত সকলই। অনেকে পদব্রজে এগোতে থাকেন। সেটারও কী উপায় আছে? ফুটপাতের অধিকাংশই থাকে ভাসমান দোকান, গাড়ির গ্যারেজ এবং নার্সারির গাছ দ্বারা দখলকৃত। বাকি যেটুকু থাকে তাতে ঠেলাঠেলি করে হাঁটতে গিয়েও দেখা যায় বাইসাইকেল, মটরসাইকেল, এমন কী সিএন্ডজি ও রিক্সার সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে হয়। বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চিন্তা করলাম কি করা যায়। সামনে এসে একটি সাইকেল থামল। স্যার কোথায় যাবেন? পরিচয় দিল পাঠাও ড্রাইভার। আমি সায় দিলাম না। পাশ থেকে একজন যাত্রী বলল ভাই ফার্মগেইট যাবেন? দর কষাকষির পর ১৬০ টাকায় ভাড়া ঠিক করে যানজট এড়ানোর জন্য উল্টোপথে চলতে শুরু করল। মোবাইলে টিপ দিয়ে দেখলাম ভাড়া ৫৫ টাকা। বেশি নিলে ৭০ বা ৮০ টাকা নিতে পারতো। কিন্তু সেখানে ১৬০ টাকা? জনবহুল এই ব্যস্ত শহরে মানুষের দুর্ভোগের যেন অন্ত নেই। এই অসুবিধার সুযোগে পাঠাও, উবার, সহজ আরও বিভিন্ন মুঠোফোন অ্যাপভিত্তিক সার্ভিস হয়েছে। যাতে যাত্রীরা মুঠোফোনের মাধ্যমে অবস্থান জেনে এসব যানবাহন ডেকে সহজে নির্ধারিত ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। ফলে বাহনগুলো দিনে দিনে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে সাধারন মানুষ কতটুকু উপকৃত হচ্ছে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে ‘পাঠাও’ নামে চালু হয় অ্যাপভিত্তিক সার্ভিস। এই সেবা প্রতিষ্ঠানটি শুরুর দিকে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে বলে তাদের রাইডার সংখ্যাও উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। পাঠাও এর মাধ্যমে অনেক তরুণ তাদের কর্মসংস্থান করতে পেরেছে। কিন্তু এর সাথে যোগ হয়েছে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা। যাচাই বাচাই এর ব্যবস্থা ক্রটি থাকার কারণে এগুলো হচ্ছে। যেমন যাত্রীদের সাথে অসংগলগ্ন আচরণ, গন্তব্যের আগেই রাইড শেষ করায় প্রবণতা, দাম দর করে যাত্রী উঠানো, ফুটপাত দিয়ে এবং উল্টোপথে বাইক চালানো, মহিলা যাত্রী পেছনে বসিয়ে হার্ড ব্রেক করা এবং নম্বর সংগ্রহপূর্বক কল, এসএমএস, ফেইসবুক কল রিকোয়েস্ট পাঠানো ইত্যাদি সহযোগিতার মনেভাব নিয়ে বেপরোয়া বাইক চালানো। একজন রাইডারের অ্যাপ ব্যবহার করে অন্য রাইডার এর ভিন্ন আনফিট বাইক চালানো, অদক্ষ মাদকাসক্ত, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাইক রাইডার নিয়োগ হওয়ায় যাত্রী জীবন দিনদিন ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে ঘন ঘন দুর্ঘটনার। যাত্রী কমিউনিটিতে এসব পাঠাও রাইডারের এমন হাজারো অসুবিধার কথা শোনা যায়। এসব রাইডারের ঘন ঘন দুর্ঘটনায় পড়ার নিরাপত্তাহীন কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা পাঠাও কর্তৃক বিতরণ করা হেলমেটকে দায়ী করেছেন। যার সুরক্ষা ব্যবস্থা খুবই নিম্নমানের। অন্যদিকে চালকদের নিবন্ধন পদ্ধতি এবং চালক নির্বাচন অত্যন্ত ক্রটিপূর্ণ। শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্স ফটোকপি এবং এনআইডির ফটোকপি থাকলেই পাঠাও এর অ্যাকটিভ রাইডার হওয়া যায়। কোন ধরনের শারীরিক পরীক্ষা বা আসক্তির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার কোন প্রচেষ্টা নিয়োগ পদ্ধতিতে নেই। জানা যায় পাঠাও প্রতিষ্ঠানটি ১০ হাজার নিম্নমানের হেলমেট বিতরণ করেছে যার মূল্য ৩৫০ টাকা মাত্র। এগুলো ব্যবহারে যাত্রীদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি রয়েছে। এ বিষয়ে পাঠাও এর একজন বিপণন কর্মকর্তার মন্তব্য হচ্ছে, যাত্রীদেরকে ব্যবহারে অভ্যস্ত করার জনই নাকি এসব হেলমেট আকৃতির ক্যাপগুলো বিতরণ করা হয়। তিনি আরও বলেন অনেক দামী হেলমেট ব্যবহারেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। খবরে প্রকাশ হেলমেটের মান নিয়ে বিএসটিআইএ’র একজন কর্মকর্তা জানান হেলমেট বাংলাদেশে তৈরি হয় না, তবে আমদানীকৃত হেলমেটের বাধ্যতামূলক মান নির্ধারণের জন্য তা আমদানী নীতিতে অর্ন্তভ‚ক্ত করা হবে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে পাঠাও এর চালক এক মহিলা যাত্রিকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মহিলাকে রক্ষা করেন। এমন অনেক পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে যা অজানাই থেকে যায়। তবে আশার বাণী হলো এ ব্যপারে স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে এসেছে স্কাউট এবং গার্লস গাইডের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাছাড়া ইদানিং আরও অনেক সংগঠনের নাম উল্লেখ করা যায়। ‘সিটিজেন অব সেফ ঢাকা’ নামক একটি সংগঠনকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে দেখা যায়। তারাও সেইফ ঢাকা- সেইফ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছে। পুলিশের পাশাপাশি এসব সংগঠন কাজ করলেও সফলতা পেতে প্রয়োজন জনসচেতনতা। রাইড ব্যবহারের পূর্বে যাচাই বাচাই করা যেমন বাঞ্চনীয়, তেমনি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে উল্টোপথে চলতেও বাধা দান করতে হবে। অন্যদিকে কোম্পানিগুলো কেবল তাদের ব্যবসার প্রচার, প্রসার নিয়ে ব্যস্ত না থেকে নিয়োগ ব্যবস্থা, যাত্রি নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হেলমেট এবং তাদের রেজিস্ট্রেশন করা গাড়ির ফিটনেস এর দিকে সতর্কতামূলক দৃষ্টি নেয়ার প্রয়োজন। নয়তো দিনদিন দুর্ঘটনা বাড়বেই। গত কয় মাসে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এর ভয়াবহতা দেখা যায়। জানা যায় গত তিন মাসে মামলা হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার যার আর্থিক দন্ড সাড়ে চার কোটি টাকারও বেশি। শুধু চালকের বিরুদ্ধে মামলা হয় ১৮ হাজার। ফিটনেসবিহীন ডাম্পিং করা হয়েছে ৮ হাজার ৭৮২টি যানবাহন। সম্প্রতি একটি দৈনিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্য পাঠাও এর বিরুদ্ধে নোটিশসহ বিভিন্ন অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে মিডিয়ারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। রেডিও, টেলিভিশন এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে জনসাধারণকে কিছুটা হলেও সচেতন করে তোলা যায়। তাতে রাইডার, জনগণ এবং কর্তৃপক্ষ সকলই উপকৃত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। চলার পথে এই জটনির্ভর জনজীবনের প্রধান চাহিদাই হলো নিরাপদ এবং ক্রটিমুক্ত যানবাহন। আপনার আমার সকলের সহযোগিতায় এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হোক এটাই আগামী দিনের প্রত্যাশা।
|
|
|
|
দলীয় ও জোটের প্রার্থীদের চূড়ান্ত মনোনয়নের পর নির্বাচনের মূল স্রোত বইতে শুরু করেছে। তবে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ তালিকা পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। যাঁরা দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা আনন্দের সাগরে ভাসছে। অনেক নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পেতে যাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। মনোনয়ন পাননি এমন অনেক নেতা অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশে সব নির্বাচনই উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে থাকে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও শঙ্কাহীন ও উৎসবমুখর হবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে। কিন্তু সব রাজনৈতিক দলেই উপদল আছে। রাজনৈতিক নেতাদের নিজস্ব গ্রুপ ও কর্মী-সমর্থক বাহিনী রয়েছে। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রার্থীরা পূর্ণ উদ্যমে মাঠে নামবেন। কর্মী-সমর্থকরা সব ভুলে প্রার্থীর জন্য ভোট প্রার্থনা করবে। কোথাও কোথাও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটবে। উত্তেজনা ছড়াবে ভোটের মাঠে। নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকে ভোটের ফল প্রকাশের পর পর্যন্ত এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি থাকবে। কিন্তু পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এখন থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা শুরু হবে। এলাকায় মাইকে প্রচার চালানো হবে। বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী অফিস হবে। হাট-বাজারে বিলি করা হবে প্রচারপত্র। সব মিলিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে যাবে ভোটের আমেজ। নির্বাচনমুখী সব কর্মকাণ্ড উৎসবমুখর পরিবেশেই হোক—এটাই সবার চাওয়া। কোনো অবস্থায়ই যেন প্রার্থীদের একপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের সংঘাত-সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও না ঘটে।
নির্বাচনে পক্ষ-প্রতিপক্ষ থাকবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ছে কোথাও কোথাও। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না। কর্মী-সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাবে, তাতে কোনো অবস্থায়ই বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। এখন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাই সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় ভোটের আগে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এলাকায় ফিরতে শুরু করে। এবারও যে ব্যতিক্রম ঘটবে, তা নয়। পেশিশক্তি দমনের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্টেটদের ব্রিফ করার সময় এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কোনো ‘বিভ্রান্তিকর বা বিব্রতকর’ পরিস্থিতির মধ্যে পড়লে ধৈর্য, বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার সঙ্গে তা মোকাবেলা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আমরা আশা করব, নির্বাচনের আগে ও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। সংশ্লিষ্ট সবাই কঠোরভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। শঙ্কাহীন, উৎসবমুখর পরিবেশে হোক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
|
|
|
|
উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে সংবাদপত্রকে বিকল্প সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সংসদে রাষ্ট্রীয় কাজকর্মের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হয়। সংবাদপত্রেও সরকারের কাজকর্মের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করা হয়। উন্নত দেশগুলোতে এর জন্য সংবাদমাধ্যমকে নানাভাবে সহযোগিতা করা হয়। এর উল্টোটা হয় তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে। ক্ষমতাসীনরা বরাবর সেখানে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধেরই সুযোগ খুঁজতে থাকে। বাংলাদেশও যেন তার ব্যতিক্রম নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল ২০১৮ নামে একটি আইন পাস করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে। অথচ এই আইনের ৩২ ধারাসহ অন্তত আটটি ধারা সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোসহ সংশ্লিষ্ট মহলগুলো প্রবল আপত্তি জানিয়ে আসছে। আইনটি আগেই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। গত সোমবার সেই ধারাগুলো প্রায় অপরিবর্তিত রেখেই সংসদীয় কমিটি সংসদে তাদের প্রতিবেদন পেশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই আইন বাস্তবায়িত হলে এ দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার আর কোনো সুযোগই থাকবে না।
সম্পাদক পরিষদ প্রস্তাবিত আইনের আটটি (৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩) ধারা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। সবচেয়ে বেশি আপত্তি ছিল ৩২ ধারা নিয়ে। সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে ‘ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি’ শব্দটি বাদ দিয়ে তার সঙ্গে ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ সংযুক্ত করা হয়েছে। সেই মোতাবেক ৩২(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতাভুক্ত অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করিতে সহায়তা করেন তাহা হইলে তিনি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’ আইনের ৩২(২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা-১-এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃ পুনঃ সংঘটন করেন, তাহা হইলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’ পাশ্চাত্যের ১০টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরাও ৩২ ধারাসহ এই আইনের চারটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি আইনের ৯টি ধারা সম্পর্কে তাদের আপত্তি জানিয়েছিল। সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনে এসব আপত্তি বস্তুত কোনো গুরুত্বই পায়নি। সংবাদপত্র-সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এরপর কোনো সাংবাদিকের পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠানের খবর সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সরকারি দপ্তরের প্রায় সব নথিই গোপনীয় এবং সেগুলোর কপি সংগ্রহ করা অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুযায়ী অপরাধ বলে গণ্য হবে। তাহলে কি এ দেশে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের কোনো প্রয়োজনই নেই—এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
আমরা আশা করি, আইনটি সংসদে পাস হওয়ার আগে সংবাদপত্র-সংশ্লিষ্টদের আপত্তিগুলো আবারও পর্যালোচনা করা হবে এবং এমন কোনো আইন পাস করা হবে না, যা সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করবে।
|
|
|
|
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের ধারাবাহিকতায় গত শনিবার চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম মতবিনিময় সভার মতো দ্বিতীয় সভায়ও তিনি নীতিনির্ধারণী কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। আজকের দিনের রাজনৈতিক পরিবেশ বিবেচনা করে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
দেশে একসময় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্মানের চোখে দেখা হতো। রাজনীতি পরিচালিত হতো গণমানুষের কল্যাণ চিন্তা করে। রাজনৈতিক দলগুলো যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করত, তাতে সাধারণ জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হতো। এসব কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণও ছিল লক্ষণীয়। কিন্তু আজকের দিনে সেই অবস্থা আর লক্ষ করা যায় না। এখন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি যেন অনেকটাই চাপিয়ে দেওয়া। দলের পক্ষ থেকে জনস্বার্থের কথা বলা হলেও সেখানে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দেখা যায় না। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব বিষয় উল্লেখ করেছেন। আগের দিনে রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বকে আলাদা চোখে দেখা হতো। তার কারণ হচ্ছে, যাঁরা রাজনীতি করতেন তাঁরা সবাই ছিলেন বিশেষ আদর্শের অনুসারী। জনকল্যাণই ছিল তাঁদের ব্রত। কিন্তু আদর্শের রাজনীতি দল ও নেতাকর্মীরা যেন বিস্মৃত হয়েছেন। আজকের দিনে তাই দেখা যায়, ক্ষমতাসীন দলে বিপরীত আদর্শের লোকজনের ভিড়। অনেকেই ক্ষমতার মোহে ক্ষমতাসীন দলে এসে যোগ দেয়। তাতে বড় ধরনের ক্ষতিও হয়। আদর্শের রাজনীতির প্রতি অনুগত নেতাকর্মীদের অবজ্ঞা করা হয়। সাধারণ মানুষের কাছেও রাজনৈতিক দল আস্থা হারায়। বিপরীত মতের লোকজন দলে ভিড়ে দলকে ভেতর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সাধারণত এ ধরনের এজেন্ডা নিয়েও রাজনৈতিক দলে অনুপ্রবেশ ঘটে থাকে। ক্ষমতাসীন দলের উন্নয়নও তখন সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। দলের মধ্যে দুর্নীতি ঢুকে পড়ে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পর পর দুই পর্বে সরকার গঠনের পর দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, তার অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে অনুপ্রবেশকারীদের কারণে। সরকার জঙ্গিবাদ দমনে সফল হয়েছে, মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের কাছে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। সরকারের উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী মানুষের কারণে দল সম্পর্কে জনগণের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বকে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। শিকড়ে ফিরতে না পারলে একসময়ের জনসম্পৃক্ত দলও যে জনভিত্তি হারায়, বাংলাদেশে তো বটেই, ভারতীয় উপমহাদেশসহ আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তার অনেক উদাহরণ আছে। আর সে কারণেই সাধারণ মানুষের কাছে যেতে বলেছেন শেখ হাসিনা। আমরা আশা করি, তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
|
|
|
|
এবারও রোজার আগে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হলো না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম কোনো কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী। সরকার কিংবা ব্যবসায়ীদের আশ্বাস কোনো কাজে লাগেনি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সব পণ্যের মজুদ চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি থাকায় মূল্যবৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বাজারে সব জিনিসের দামই বেড়েছে। রোজার সময় চিনির ব্যবহার বেড়ে যায়। বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। অথচ আমদানি ক্ষেত্রে গত ডিসেম্বর থেকে চিনির দাম টনপ্রতি ৫০ ডলার কমেছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকায় পেঁয়াজের পাইকারি আড়তে অভিযান চালিয়ে বস্তার গায়ে দাম ও পরিমাণ লেখার নির্দেশনা দিয়েছিল। ব্যবসায়ীরা এখনো এ নির্দেশনা মানছেন না। কথা ছিল বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, র্যাব-পুলিশের ভ্রাম্যমাণ আদালত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং টিমসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আগে থেকে রমজানকেন্দ্রিক পণ্যের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ও জাল-জালিয়াতি নিয়ে নজর রাখবে। বাস্তবে তার ছিটেফোঁটাও নেই। অনিবার্য প্রভাব পড়েছে বাজারে। নিয়ন্ত্রণহীন বাজারে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন খরচ কিংবা আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের ওঠানামা নয়, বাংলাদেশের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে বাজার সিন্ডিকেটের গোপন ইশারায়। ক্ষেত্র বিশেষে মনে করা যেতে পারে, এই সিন্ডিকেটের কাছে সরকারি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও অসহায়। প্যাকেটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে পণ্যের দাম লেখা আছে কি না, উৎপাদন ও মেয়াদ ঠিকঠাক আছে কি না—এসব নিয়ে মোবাইল কোর্ট সর্বশেষ কবে পরিচালিত হয়েছে? সাধারণ ভোগ্যপণ্যে ভেজাল মেশানো, পণ্য তৈরির পরিবেশসহ নানা বিষয়ে রোজার মাসে কোনো অভিযান বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কোনো সিদ্ধান্ত কি গত বুধবার পর্যন্ত বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ নিয়েছে? ওদিকে আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবি জানিয়েছে, দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশেরও বেশি সরাসরি পানের জন্য নিরাপদ নয়। ওই দুধ বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া এবং পাঁচটি জেলার ১৫টি হিমাগার থেকে সংগৃহীত নমুনায় মলবাহিত কলিফর্ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশের নমুনাই কোলাই দ্বারা উচ্চমাত্রায় দূষিত। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, দুগ্ধ খামার থেকে শুরু করে বিক্রির জন্য পাঠানো প্রতিটি পর্যায়ে দুধ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত।
আর এসব ঘটনা ঘটছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি না থাকার কারণেই। প্রায় প্রতিটি পণ্যে ভেজাল দেওয়া যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। যেহেতু অনৈতিকভাবে দাম বাড়ালে কিংবা ভেজাল দেওয়া হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো খবরদারি থাকে না, শাস্তি হয় না। কাজেই ব্যবসায়ীরাও এখন যেন মওকা পেয়ে গেছে। তবে রোজার মাসে বাজারে নজরদারি না বাড়ালে ভেতরে ভেতরে জন-অসন্তোষ বাড়বে, যার ফল ভালো হবে না। সময় থাকতে বাজারে নজর দিন।
|
|
|
|
জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পর্ষদ হিসেবে বিবেচিত নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও ১০ অস্থায়ী সদস্য দেশের প্রতিনিধিসহ ৪০ সদস্যের প্রতিনিধিদল গত শনিবার ঢাকায় এসে রবিবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদলটি গত সোমবার ঢাকা ত্যাগ করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ করে। সাক্ষাত্কালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে রাশিয়া, চীন, জাপান ও ভারতের মতো দেশগুলো জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো চাপ সৃষ্টির আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
রোহিঙ্গা সংকট নতুন করে দেখা দেয় গত বছরের আগস্ট মাসের শেষের দিকে এসে। নতুন করে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ এক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই চ্যালেঞ্জ অদূর ভবিষ্যতে আরো কঠিন রূপ নিতে পারে। দেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আশ্রয়শিবিরগুলোতে মানবপাচারকারীদের তত্পরতা বেড়েছে। অবৈধ পথে বা বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বিদেশে পাড়িও জমিয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ এরই মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোহিঙ্গার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু মিয়ানমারের নানা টালবাহানায় প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অকথ্য নির্যাতন শুরুর পর থেকেই এ বিষয়ে মিথ্যাচার করছে দেশটি। অথচ সেখানে জাতিগত নিধন হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধিরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে তাঁদের মতামত দিয়েছেন। রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার হলেও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় একটি দেশ কী করে এমন সভ্যতাবিরোধী কাজ করতে পারে, এ প্রশ্নটিই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ এক বিরল নজির স্থাপন করেছে। কিন্তু এত মানুষের চাপ নেওয়া বাংলাদেশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। উপরন্তু রোহিঙ্গাদের উপস্থিতির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হতে পারে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আশ্রয়শিবিরগুলোর পরিবেশও নষ্ট হবে। সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা সংকট নতুন মোড় নিতে পারে। এ সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ বরাবর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ভারত, চীন, রাশিয়া, জাপানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে। অন্যথায় এ সমস্যার সমাধান সুদূরপরাহত। বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সহায়তাও চেয়েছে। জাতিসংঘও এ বিষয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা যে পরিবেশ-পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করে গেলেন, তাঁদের অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে একটি সুন্দর সমাধান হতে পারে।
|
|
|
|
আদর্শ ও মূল্যবোধ ছাড়া রাজনীতি হয় না। একেক দলের আদর্শিক ভিত্তি একেক রকম। সেসব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু আদর্শহীন রাজনীতি ভ্রষ্টাচার মাত্র। এ ভূখণ্ডে রাজনীতির নামে ভ্রষ্টাচারের সূচনা পাকিস্তানের জন্মের সঙ্গে। সামরিক শাসনের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। আইয়ুব-ইয়াহিয়ার ভ্রষ্ট রাজনীতি এ দেশের মানুষ মোকাবেলা করেছে মূল্যবোধের ও আদর্শের রাজনীতির মাধ্যমে। সে লড়াইয়ে আওয়ামী লীগও ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে ভ্রষ্টাচারী রাজনীতি আর থাকবে না, এমন আশাই করা হয়েছিল। এমন আশা রাজনীতিকরা দিয়েছিলেনও। সেই আশা পূরণ হয়েছে কি? আওয়ামী লীগ দলগতভাবে আদর্শহীন না হলেও স্বাধীনতার পর দলটিতে আদর্শহীন, সুবিধাবাদী লোকের ভিড় জমে। পঁচাত্তরের পর তারা দ্রুত সটকে পড়ে। সামরিক শাসকরা তাদের বগলদাবা করে আরো পুষ্ট করে তোলে। স্বাধীনতাবিরোধী এবং আদর্শচ্যুত বামপন্থীরাও তাদের পকেট পার্টিতে ভেড়ে। এসব দলের আদর্শ ছিল না, এখনো নেই। তাদের ছিল এবং আছে কিছু ‘সুবিধাজনক’ কর্মসূচি।
একসময় যারা আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করত, আওয়ামীবিরোধী রাজনীতি করত, সেই বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী স্বার্থ হাসিলের জন্য যোগ দিয়েছে আওয়ামী লীগে। অনেকে সরাসরি বিএনপি বা জামায়াত থেকে, অনেকে জামায়াত থেকে বিএনপি হয়ে আওয়ামী লীগে ভিড়েছে। তাদের অনেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে পদও বাগিয়ে নিয়েছে পুরনো, ত্যাগী বা আদর্শবাদী আওয়ামী লীগারদের হটিয়ে। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী লোকগুলো আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে রাতারাতি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা তারাই বেশি বলে।
বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘটনা ঘটেছে দুই ধাপে। প্রথমে ২০০৯ সালে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। দ্বিতীয় ধাপে ২০১৪ সালে, চারদলীয় জোটের সরকারবিরোধী সহিংস আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর। আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘটনা ঘটেছে ৮৩টি। ৬২টি ঘটনায় একই সঙ্গে জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীরা এবং ২১টি ঘটনায় শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরা যোগ দেয়। যোগদানের ৬০টি ঘটনাই ঘটেছে ২০১৪ সালের পর। বিএনপি থেকে ২৫ হাজার নেতাকর্মী ঢুকেছে আওয়ামী লীগে।
আওয়ামী লীগের একটি আদর্শ রয়েছে, তারা মূল্যবোধচালিত দল। সভানেত্রী নিজে বলেছেন, জামায়াত-বিএনপির লোকদের যেন দলে ঢুকতে দেওয়া না হয়। দলের শীর্ষ নেতাদের মুখেও এমন কথা শোনা যায়। তাহলে আদর্শহীনতার এত বড় চালান কী করে ঢুকল? এ প্রবণতা দলের জন্য তো নয়ই, দেশের জন্যও মঙ্গলজনক নয়। বর্ষীয়ান আদর্শবাদী নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল বলে যাঁরা আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রাখেন, তাঁদের জন্যও বিষয়টি হতাশাজনক। আওয়ামী লীগ কি আদর্শবাদী পরিচয় ধরে রাখতে পারবে?
|
|
|
|
কপোতাক্ষ নদ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। চাষাবাদ তো ব্যাহত হয়ই, মানুষের ঘরদোরেও পানি উঠে যায়। সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলের এই জলাবদ্ধতা নিয়ে পত্রপত্রিকায়ও বহু লেখালেখি হয়েছে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা দূর করতে অবশেষে ২০১১ সালে ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু সাত বছরেও সেই কপোতাক্ষ খনন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়নি। এখন সেখানে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একটি ক্ষুদ্র, অথচ শক্তিশালী পক্ষ তাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ার অজুহাতে প্রকল্পের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে কপোতাক্ষপারের কয়েকটি উপজেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাহত হয়ে পড়েছে।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, কপোতাক্ষ খননের পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমে মূল নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ (ক্রসড্যাম) দিয়ে জোয়ারের পলিযুক্ত পানি টিআরএমএম বিলে প্রবেশ করানো হয়। বর্ষায় বাঁধ খুলে দিয়ে জনপদের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। যেটুকু কাজ হয়েছে তার ভিত্তিতেই এলাকার মানুষ গত বছর যথেষ্ট উপকৃত হয়েছে এবং জলাবদ্ধতার হাত থেকে একরকম মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু গত বর্ষায় ড্যামটি অপসারণ করা হলেও বর্ষার পর তা আর পুনঃস্থাপন করা হয়নি। ফলে পলি জমে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে, চার শতাধিক নৌকার মালিক ও জেলেরা অবাধে চলাচলের জন্য ড্যাম পুনঃস্থাপনে বাধা দিচ্ছে। একটি প্রকল্প নেওয়ার আগে সব দিক বিবেচনা করেই তা নেওয়া হয়। নিশ্চয়ই কপোতাক্ষ খনন প্রকল্পেও তা করা হয়েছে। এখন এই প্রকল্পের কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে কেন? আমরা আশা করি, পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক গঠন, চাষাবাদের ধরন—সব কিছুই নদীর সঙ্গে সম্পর্কিত। নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে—এই উক্তির মধ্যেও বিন্দুমাত্র অতিরঞ্জন নেই। অথচ প্রতিনিয়ত নদীগুলো মরে যাচ্ছে। বহু নদী এরই মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এই অবস্থা আর এগোতে দেওয়া উচিত নয়। দেশ বাঁচাতে হলে নদী ব্যবস্থাপনায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বেশি করে নদী খনন প্রকল্প হাতে নিতে হবে। যে উদ্দেশ্যে কপোতাক্ষ খনন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, অতি দ্রুত তা সম্পন্ন করতে হবে। তা না হলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে।
|
|
|
|
একটি রাজনৈতিক দলের ওপর যেমন দেশের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করে, তেমনি আদর্শভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে সুশাসন ও উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনীতির গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রের উন্নতি। রাজনীতিতে পচন ধরলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যায়। রাজনীতি যখন আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়, তখনই দেশের সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পেরিয়ে আসার পরও দেশের রাজনীতি যেন আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সুনির্দিষ্ট আদর্শের ভিত্তিতে। স্বাধীনতা লাভের পর প্রণীত সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছিল। একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নির্মাণের অঙ্গীকার থেকে রাষ্ট্রকে সরিয়ে দিয়েছে দুটি সামরিক শাসন। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উত্থান ওই সামরিক শাসনকালেই। কিন্তু পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা হয়েছিল। টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। গত ৯ বছরে দেশের অর্থনীতি অনেক অগ্রসর হয়েছে। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প দেশের অর্থায়নে দৃশ্যমান হচ্ছে। দেশে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সাজা হয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু দেশের রাজনীতি, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি কি আদর্শিক জায়গায় উদাহরণ সৃষ্টি করতে পেরেছে?
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল। দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এখানেই আওয়ামী লীগের বড় তফাত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ আওয়ামী লীগ কতটা ধরে রাখতে পেরেছে, এমন প্রশ্ন এখন উচ্চারিত হয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। আদর্শভিত্তিক রাজনৈতিক দল হওয়ার পরও এই দলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অনুপ্রবেশ ঘটে কী করে? কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ‘জামায়াত-শিবির থেকে আওয়ামী লীগে পদধারী’ শীর্ষক খবরটি রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো, যেখানে এলাকাভিত্তিক তালিকা রয়েছে অনুপ্রবেশকারীদের। জামায়াত-শিবির যে এ দেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, এ কথা কে না জানে? সেই দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘটনা ঘটে কী করে? এমনকি দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, ‘জামায়াত-শিবির ও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নয়।’ তার পরও জামায়াত-শিবির থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়নি কেন? দলের জেলা পর্যায়ের নেতা বা স্থানীয় সংসদ সদস্যরা কি ইচ্ছা করলেই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন? দলের আদর্শ জলাঞ্জলি দিতেও তাঁদের বাধে না কেন? তাঁরা কি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে?
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাস করে না, এমন কেউ আওয়ামী লীগের আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। কেউ যদি জামায়াত-শিবির থেকে এসে আওয়ামী লীগের ঝাণ্ডা হাতে নেয়, তাহলে সন্দেহের অবকাশ থেকে যায়। ভেতরে থেকে তারা যে আওয়ামী লীগকে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এই অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আদর্শবিরোধী চক্রান্ত প্রতিরোধ করতে হবে।
|
|
|
|
অনূর্ধ্ব-১৫ সাফের পর হংকং জকি কাপেও চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের কিশোরীরা। রবিবার স্বাগতিক হংকংকে ৬-০ ব্যবধানে পরাজিত করে শিরোপা জয় করেছে। এবারের প্রতিযোগিতায় গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। প্রতিযোগিতার তিন ম্যাচে মোট ২৪ গোল করে হজম করেছে মাত্র দুই গোল। প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ১০-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পরের ম্যাচে ইরানকে বিধ্বস্ত করে ৮-১ গোলে। শেষ ম্যাচে হংকংয়ের জাল ছুঁয়েছে ৬ গোল। নাস্তানাবুদ হংকং। জয় ছাড়া অন্য কিছু যে বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলারদের নেই, তা স্পষ্ট। গত ডিসেম্বরে ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ চার ম্যাচে করেছিল ১৩ গোল। দুই টুর্নামেন্টের সাত ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা মোট ৩৭টি গোল করেছে। ম্যাচপ্রতি গোলের গড় পাঁচটির বেশি। প্রতিপক্ষ দলগুলোকে খাটো করে দেখারও কোনো সুযোগ নেই। জকি কাপের কথাই যদি ধরা হয়, প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে ২২ ধাপ এগিয়ে। ইরান এগিয়ে ৪৪ ধাপ। অর্থাৎ ছেলেদের ফুটবল শুধু নয়, মেয়েদের ফুটবলেও মালয়েশিয়া ও ইরানের অবস্থান ওপরের দিকে। জকি কাপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হংকংয়ের সঙ্গেও বাংলাদেশের ব্যবধান কম নয়। বাংলাদেশ থেকে ৩১ ধাপ এগিয়ে আছে হংকং। তার পরও এই টুর্নামেন্ট নিজেদের করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রমাণ করেছে, তাদের ভবিষ্যৎ আছে। এখন প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই মেয়েরা যে আগামী দিনে আরো ভালো ফল এনে দিতে পারবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কঠোর অনুশীলন যে ভালো ফল এনে দিতে পারে, বাংলাদেশের মেয়েদের ট্রফি জয় তারই প্রমাণ। দীর্ঘদিন একসঙ্গে অনুশীলন করেছে আমাদের কিশোরীরা। দলীয় বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে তা কাজে লেগেছে। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত ফিটনেসের মানও উন্নত হয়েছে। ফুটবল ফিটনেসের খেলা। ক্রীড়াবিজ্ঞানের পরসিংখ্যান অনুযায়ী যেখানে ১২ মিনিটে গড়ে ২১০০ মিটার দৌড়াতে পারলে কুপার টেস্টে সেটা বিশ্বমানের ফিটনেস হিসেবে বিবেচিত হয়, সেখানে বাংলাদেশের মেয়েরা ওই সময়ে ২৮০০ মিটার বা তার চেয়েও বেশি দৌড়াতে পারছে। আধুনিক ফুটবলের টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল বিষয়গুলো মাঠে দক্ষতার সঙ্গে প্রমাণ করেছে মেয়েরা। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মনোবল। যেকোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করার মনোবল রয়েছে এই দলের সব সদস্যের। অর্থাৎ দলীয় বোঝাপড়া নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
বর্তমান সরকার খেলধুলার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। শুধু মেয়েদের নয়, দেশের ফুটবল অঙ্গন এই অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যাবে বলে আমরা আশা করি।
|
|
|
|
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পূর্ণ করল নতুন এক অনুষঙ্গ নিয়ে। এ বছরই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি মিলেছে জাতিসংঘের কাছ থেকে। একসময় যে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলা হতো, সেই বাংলাদেশ আজ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে গেছে। ২০১৫ সালেই বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ডে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আজকের এই অগ্রযাত্রার স্বীকৃতি মিলেছে বিশ্ব থেকে। বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বনেতৃত্বের আস্থা বেড়েছে। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠি তারই প্রমাণ বহন করে। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন এক বিস্ময়। গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘ইনক্লুসিভ ইকোনমিক ইনডেক্স’ অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। উল্লেখ করার মতো বিষয় হচ্ছে, আজকের বাংলাদেশ একদিন পাকিস্তানের অংশ ছিল। ১৯৭১ সালে এই বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল অনেকটাই শূন্য হাতে। সেই বাংলাদেশ আজ বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার সাহস দেখাতে পারছে। নিজস্ব অর্থায়নে এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির আকার ২০ লাখ কোটি টাকা। গত এক দশকে দেশের বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার যে হারে বিনিয়োগ করেছে, তাতে অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। সমুদ্রসীমা-সংক্রান্ত বিরোধের মামলায় বিজয় থেকে শুরু করে অনেক অর্জন গত এক দশকে। রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় থাকলে যে একটি দেশের উন্নয়ন যেকোনো বাধা পেরিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। দেশের সড়ক যোগাযোগ থেকে শুরু করে সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এসেছে জোয়ার। অর্থনৈতিক সক্ষমতায় বাংলাদেশ যে আর পিছিয়ে নেই, তা জেনেছে বিশ্ব। ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশিদের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের তৈরি পোশাক শিল্প আজ বিশ্বে সমাদৃত। বিশ্ববাজারে ব্র্যান্ড বাংলাদেশ বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। আয়তনে বিশ্বের ৯৪তম দেশ হয়েও সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং ধান ও মাছ উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ শীর্ষ অবস্থান বাংলাদেশের। দেশের বাজেটের আকার বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ২৪ শতাংশে। বেড়েছে রপ্তানি। মাত্র দুই কোটি ডলার রিজার্ভ ছিল যে দেশের, সেই রিজার্ভ এখন তিন হাজার ৩৩৭ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ৭.২৮ শতাংশ। এখন প্রয়োজন এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে সবার আগে যেটা প্রয়োজন তা হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। দেশের কল্যাণে রাজনৈতিক সরকারের ধারাবাহিকতার ফসল জনগণের ঘরে যাবে।
|
|
|
|
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা জানে না, আবার কখনো নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবে কি না। তাদের সামনে জীবনের কোনো লক্ষ্য নেই। ভবিষ্যতের কোনো আশা নেই। এই নির্যাতিত, হতাশ ও জীবন ধারণের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাহীন মানুষ সহজেই আইএস, আল-কায়েদা বা এমনই কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর খপ্পরে চলে যেতে পারে। ইতিমধ্যে তেমন কিছু আলামতও দেখা গেছে। সে ক্ষেত্রে শুধু মিয়ানমার বা বাংলাদেশ নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও তা বড় ধরনের ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসিয়ান-অস্ট্রেলিয়া বিশেষ শীর্ষ সম্মেলনে শনিবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকও তেমন আশঙ্কাই ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন কোনোমতেই আর মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উদ্যোগের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান খুঁজতে হবে। তিনি যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেছেন, সেই মঞ্চে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চিও উপস্থিত ছিলেন। সিডনির যে মিলনায়তনে এই সম্মেলন চলছিল, তার কয়েক শ গজ দূরেই শত শত মানুষ সু চিবিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল। শুধু তা-ই নয়, অস্ট্রেলিয়ার একজন সাবেক বিচারকসহ পাঁচজন আইনজীবী শুক্রবার দেশটির আদালতে সু চির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলাও করেছেন। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই নেত্রীর কি এর পরও হুঁশ ফিরবে না?
এটা ঠিক, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য দায়মুক্তি থাকার কারণে অস্ট্রেলিয়ার আদালত সু চির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা কোনো ধরনের সাজার নির্দেশ দিতে পারবেন না। কিন্তু এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে দুনিয়াব্যাপী মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণার যে প্রকাশ ঘটেছে, তা কি তিনি অনুভব করতে পারছেন না? মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী যে উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সেটি কি মিয়ানমারের নেত্রী বা তাঁর দেশ উপলব্ধি করতে পারছে না? একই রকম উদ্বেগ এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ অনেক বিশ্বনেতাও প্রকাশ করেছেন। আঞ্চলিকভাবেও এ ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা আশা করব, অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের নেতৃবৃন্দ দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেবেন। মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে যেকোনো উদ্যোগে তাঁর দেশ সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। একই রকম আশ্বাস বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে। এখন সম্পূর্ণ বিষয়টি নির্ভর করছে মিয়ানমারের ওপর।
বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি করার পর তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, এখনো প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি; বরং নানাভাবে প্রত্যাবাসন বিঘ্নিত করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আরো জোরালো ভূমিকা রাখা জরুরি হয়ে উঠেছে।
|
|
|
|
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন তরুণ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে গেছে। কোথাও বন্ধুদের হাতে খুন হচ্ছে স্কুল বা কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। উঠতি বয়সী তরুণরা অবলীলায় খুন-খারাবির মতো ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ছে। কিছুদিন আগে হোলি উৎসবে ডেকে নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। উঠতি বয়সীরা কেন ভয়ংকর সব অপরাধের সঙ্গে জড়াচ্ছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে, সামান্য কারণেই ঘটছে এসব খুন-খারাবির ঘটনা। কোথাও খুনের নেপথ্যে রয়েছে কিশোর প্রেম। কোথাও এলাকার সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব। কোথাও নিছকই বীরত্ব দেখাতে গিয়ে খুনের মতো জঘন্য ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর বয়সীরা।
সমাজ নিয়ে যাঁদের চিন্তা-ভাবনা, তাঁরা বলছেন, আজকের দিনে এমন অনেক পরিবার আছে, যেখানে মা ও বাবা কর্মজীবী। নিজেদের ক্যারিয়ার দেখতে গিয়ে অনেকেই ছেলেমেয়েদের দিকে ঠিকমতো দৃষ্টি দিতে পারেন না। অন্যদিকে যৌথ পরিবার প্রথা উঠে গেছে অনেক আগেই। এমন অনেক পরিবারই পাওয়া যাবে, যেখানে পারিবারিক অনুশাসন বলতে কিছু নেই। যেখানে মা-বাবা দুজনই দিনের বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকেন, সেখানে উঠতি বয়সীদের দেখার কেউ নেই। এই সময়ে সহজলভ্য প্রযুক্তি একজন কিশোর বয়সীকে কোন পথে নিয়ে যাচ্ছে, তা কেউ বলতে পারে না। আগের দিনে পাড়া-মহল্লায় সামাজিক অনুশাসন ছিল। আজকের দিনের নাগরিক জীবন থেকে সামাজিক অনুশাসন উধাও হয়ে গেছে। ফলে একধরনের স্বাধীনতাবোধ থেকেও তরুণ মনন স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে চাইছে। বেয়াড়া হয়ে ওঠার বয়সে বেপরোয়া হয়ে ওঠার সব রসদই কিশোর ও তরুণদের হাতের নাগালে। ফল দাঁড়াচ্ছে এই যে স্বভাবে অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে তারা। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগই এখন বাণিজ্যপ্রধান। সেখানেও মূল্যবোধ শিক্ষা দেওয়া হয় না। বাড়িতে কোনো অনুশাসন নেই। পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন ও মূল্যবোধের অভাবেও বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। হাত বাড়ালেই মিলছে ভয়ংকর মাদক। সঠিক পথনির্দেশনারও যেন কেউ নেই। যে সময়ে একজন কিশোর বা তরুণের মনোজগৎ তৈরি হয়, সেই সময়ে সে অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় হতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ জগতের সঙ্গে। এসব কারণেই পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠছে গ্যাং গ্রুপ। রাজধানীতে এমন কিশোর গ্যাংয়ের হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে অনেক কিশোর।
এ অবস্থা থেকে ফিরতে না পারলে সমাজের যে ভয়াবহ ক্ষতি হবে, তা পূরণ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এ থেকে মুক্তির উপায় কী? হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধগুলো নতুন করে ফিরিয়ে আনতে হবে। পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ নতুন করে তৈরি করতে না পারলে সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা অসম্ভব হবে। রোধ করা যাবে না তরুণ বয়সীদের অপরাধপ্রবণতা।
|
|
|
|
হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি আজ স্বাধীন। পরাধীনতার সেই শৃঙ্খল ভাঙতে যে ঐতিহাসিক মুহূর্তটি সবচেয়ে বড় অনুঘটকের কাজ করেছে, সেটি হলো ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বিকেল, যে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে) জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তাঁর মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণটি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছিল মানুষ, পেয়েছিল তাদের কাঙ্ক্ষিত সব দিকনির্দেশনা। বারুদের মতো জ্বলে উঠেছিল দেশ। ভাষণের প্রতিটি শব্দ নির্বাচন করা হয়েছিল অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনের নিরিখে। কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর এই ভাষণকে একটি ‘মহাকাব্য’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, আর যিনি এই ভাষণ দিয়েছেন, তাঁকে বলেছেন ‘মহাকবি’। অনেক ঐতিহাসিক তাঁদের গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্থান দিয়েছেন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে। তাঁদেরও অনেকে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেসকোও বঙ্গবন্ধুর এই অসাধারণ ভাষণটিকে বিশ্বঐতিহ্যের এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ কী নিদারুণ দুঃখ ও লজ্জার বিষয় যে বঙ্গবন্ধুর নিজ দেশেই দীর্ঘদিন ধরে এই ভাষণটি নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর একটা দীর্ঘ সময় ধরে এমন অপচেষ্টা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে না দেওয়া। ইতিহাস পাল্টে দেওয়া।
স্বাধীন দেশে আবারও অনেক রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ধারা পুনঃ স্থাপিত হয়েছে। ৭ই মার্চ ফিরে এসেছে নতুন মর্যাদায় ও নতুন শক্তিতে। আসলে এই দিনটিই ছিল বাঙালির স্বাধীনতার পথে মোড় পরিবর্তনের দিন। পাকিস্তানি শাসকরা তৈরি ছিল। পঁচিশে মার্চ রাতে যে হামলা চালিয়েছিল, সেটি ৭ই মার্চে চালানোর পরিকল্পনা ছিল। তারা ঠিক করে রেখেছিল, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেই রেসকোর্স ময়দানে হামলা চালানো হবে, বিমান থেকে বোমা বর্ষণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু সচেতন ছিলেন তাদের চক্রান্ত সম্পর্কে। তাই সেই ভাষণে তিনি অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিটি শব্দ চয়ন করেছেন, যাতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সেটিকে তাত্ক্ষণিক স্বাধীনতার ঘোষণা বলে প্রমাণ করতে না পারে। আবার প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতারই ঘোষণা দিলেন তিনি। তিনি বললেন, তিনি যদি আর হুকুম দিতে না পারেন, তাহলে কী কী করতে হবে। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। শত্রুকে প্রতিরোধ করতে হবে। প্রয়োজনে আরো রক্ত দিতে হবে। পাকিস্তানি জেনারেলরাও স্বীকার করেছেন, বঙ্গবন্ধুর বুদ্ধিমত্তার কাছে তাঁরা সেদিন হেরে গিয়েছিলেন। সে জন্যই তিনি বঙ্গবন্ধু হয়েছেন, জাতির জনক হয়েছেন, বিশ্বনন্দিত নেতা হয়েছেন।
বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর একটি এই ৭ই মার্চ। ইতিহাস থেকে যাঁরা এই দিনকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করবে, তারা নিজেরাই মুছে যাবে। তার পরও ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকে না, থাকবে না। যেমন থেমে থাকেনি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র। থেমে থাকবে না তাদের এদেশীয় দোসরদের ষড়যন্ত্র। স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে এবং তা আরো অর্থবহ করতে হলে জাতিকে এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে, সচেতনতার স্তরকে এগিয়ে নিতে হবে।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো : মাহবুবুর রহমান ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মো: হাবিবুর রহমান । সম্পাদক কর্তৃক বিএস প্রিন্টিং প্রেস ৫২/২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, সুত্রাপুর ঢাকা খেকে মুদ্রিত ও ৬০/ই/১ পুরানা পল্টন (৭ম তলা) থেকে প্রকাশিত বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৫১,৫১/ এ রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (৪র্থ তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা -১০০০।
ফোনঃ-০২-৯৫৫০৮৭২ , ০১৭১১১৩৬২২৬
Web: www.bhorersomoy.com E-mail : dbsomoy2010@gmail.com
|
|
|
|