প্রধান প্রতিবেদক আবুল মনসুর আহমেদ : বাংলাদেশে এইচআইভি এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৩২ জন। দেশে সংক্রমিতদের মধ্যে শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের হার সবচেয়ে বেশি।
এ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ বৃহস্পতিবার পালিত হবে বিশ্ব এইডস দিবস। প্রতিবছরের ১ ডিসেম্বর এইডস দিবস পালন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য—অসমতা দূর করি, এইডসমুক্ত বিশ্ব গড়ি। দিবসটি উপলক্ষে পালন করা হবে নানা কর্মসূচি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এইডস/এসটিডি কর্মসূচির সিনিয়র ম্যানেজার মো. আক্তারুজ্জামান জানান, দেশে প্রথম এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এইচআইভি সংক্রমণ দশমিক শূন্য ১ শতাংশের কম। এ হার ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তিনি আরও জানান, এইডস বৈশ্বিক রোগ। বিশ্বের প্রায় ৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষ এইচআইভিতে আক্রান্ত। বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। এখন পর্যন্ত দেশে শনাক্ত হওয়া ৮ হাজার ৭৩২ জনের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে ৭৬ শতাংশ।
আক্তারুজ্জামান জানান, বাংলাদেশে এইচআইভির সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম। এর পরও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েছে। কারণ সীমান্তবর্তী দেশগুলোয় এর সংক্রমণ বেশি। দেশে শিরায় মাদক গ্রহণকারীর পাশাপাশি যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামীদের মধ্যে এইচআইভির সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। এইচআইভি সম্পর্কে অসচেতনতায় সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ে।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০৩০ সালে বিশ্ব থেকে এইডস নির্মূলে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনের দ্বিতীয় ট্র্যাক স্ট্র্যাটেজি ৯৫-৯৫-৯৫ নিয়েছে বাংলাদেশ। এ স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী এইচআইভি আক্রান্তদের শতকরা ৯৫ জনকে শনাক্ত করে ৯৫ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। সেইসঙ্গে চিকিৎসাধীন ৯৫ শতাংশের ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
বাংলাদেশ এ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ৯৫ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরপর শনাক্তকৃত ৯৫ জনের বিপরীতে ৭৬, চিকিৎসাধীন ৯৩ জনের ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। লক্ষ্য অর্জন না হওয়ার মূল কারণ—প্রতি জেলায় এইচআইভি পরীক্ষার সুযোগ না থাকা।
আক্তারুজ্জামান জানান, ২৩ জেলায় এইচআইভি পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। সংক্রমণ রোধে প্রতি জেলায় পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপন; সরকারি হাসপাতালে শিরায় মাদক গ্রহণকারী, যৌনকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামীদের মধ্যে এইচআইভি চিকিৎসা নিশ্চিত; আক্রান্তদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেসব কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা ও বৈষম্য রয়েছে, তা দূর করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।