বিশেষ প্রতিবেদক : আবুল মনসুর আহমেদ,
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিদেশে অধ্যয়নের জন্য সবচেয়ে পছন্দসই স্থানের মধ্যে একটি হচ্ছে ফিনল্যান্ড। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী সেখানে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি ও বিভিন্ন কোর্সে অধ্যয়ন করছেন। ফিনল্যান্ডের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে পরিচিত।
ফিনল্যান্ড ইউরোপ মহাদেশের সবচেয়ে সুন্দরতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সেখানে তাদের জীবনটাকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি উপভোগ করছেন। সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাব্যবস্থা, সুরক্ষা এবং যোগাযোগের ব্যাপারে খুব ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। ফিনল্যান্ড সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির সুযোগ দিয়ে থাকেন।
কেন বেছে নিবেন ফিনল্যান্ড?
আপনি কেন ফিনল্যান্ডকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বেছে নিবেন তার প্রধান একটি কারন হতে পারে ফিনল্যান্ডের বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সাশ্রয়ী মূল্যের টিউশন ফি। মুলত ফিনিশ সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। এছাড়া ফ্রান্সে উচ্চশিক্ষার জন্য ৫০% থেকে ৯০% পর্যন্ত স্কলারশিপ প্রদান করা হয় শুধু তাই নয় কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তো ১০০% স্কলারশিপও দিয়ে থাকে। এছাড়া ফিনল্যান্ড বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি বেশ সচেতন এবং এদের জীবনযাত্রার মান অনেক ভালো।
ফিনল্যান্ডে অধ্যয়নের ৫টি কারণ-
১. বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশে বসবাসের সুযোগ
২. বিশ্বের সেরা উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে অধ্যয়নের সুযোগ
৩. সুস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
৪. বিশ্বের তৃতীয়তম পরিষ্কার বায়ুতে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ
৫. বিশ্বের সর্বাধির উদ্ভাবনী দেশে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ
ফিনল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন?
আপনি যদি ফিনল্যান্ডে ব্যাচেলর ডিগ্রি বা অনার্স করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এইচএসসি পাস হতে হবে। আর যদি মাস্টার্স/পিএইচডি ড্রিগ্রি করতে চান তাহলে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিনিমাম ৫৫ ক্রেডিট পাশ হতে হবে এবং সেইসকল বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া শর্তে উপনিত হতে হবে। এছাড়া ফিনল্যান্ডের কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আইএলটিএস টাও চেয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ৬ অথবা ৬.৫ স্কোর অর্জন করতে হবে।
ফিনল্যান্ডে মাস্টার্স প্রোগামে ভর্তি হওয়ার সময় ঃ
ফিনল্যান্ডে মাস্টার্স প্রোগামে ভর্তি হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো ক্যালেন্ডার নেই। বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করার প্রয়োজন হয়, সেগুলো হচ্ছে-
১. সঠিক প্রোগ্রাম ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন
২. আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার নিয়মনীতি
৩. লিভিং ও টিউশন ফি চেক করা
৪. সেমিস্টার শুরু হওয়ার আগে আবেদন করা (ফিনল্যান্ডে নথিভুক্তির সময়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে)।
৫. নিজের দেশ থেকে আবাসিক পারমিটের জন্য আবেদন করা
৬. থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা
ফিনল্যান্ডে লেখা-পড়ার পাশাপাশি চাকরি করতে পারব কি?
অনেকের মনে এই প্রশ্নটি প্রায় সময় আসে যে ফিনল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসাতে যাবার পর লেখা পড়ার পাশাপাশি আমরা চাকরি করতে পারব কি বা সেই সুযোগ ফিনল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে থাকে কিনা। উত্তরটি হচ্ছে হ্যা, আপনি চায়লেই লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরি করতে পারবেন।
ফিনল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য একাউন্টে কত টাকা থাকা লাগবে?
আপনি যদি ফ্রান্সে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার একাউন্টে অর্থাৎ স্টুডেন্ট এর একাউন্টে প্রায় ৬৭৫০ ইউরো থাকতে হবে। যেটা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৭ লাখ টাকা। এবং এই টাকাটা অবশ্যই আপনার একাউন্টে মানে স্টুডেন্টের পার্সোনাল একাউন্টে থাকতে হবে অন্য কারো একাউন্টে থাকলে আপনি রেসিডেন্স পারমিট পাবেন না, অর্থাৎ আপনার ভিসা গ্রান্টেড হবে না।
ফিনল্যান্ডে কি ফ্রীতে পড়া সম্ভব?
আপনি জানলে অবাক হবেন যে ফিনল্যান্ডে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের ১০০% স্কলারশিপ দেয়া হয়। তবে এটা কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ভিত্তি করে দেয়া হয় যেমন শিক্ষার্থীদের দেশ, তাদের সিজিপিএ, লেখাপড়ার বিষয় ইত্যাদি। অর্থাৎ ফিনল্যান্ডে একজন বাংলাদেশি স্টুডেন্ট হিসেবে আপনিফ্রিতে লেখাপড়ার সুযোগ পেলেও পেতে পারেন।
উচ্চশিক্ষা শেষ হবার পর ফিনল্যান্ডে কাজ করা যাবে কি?
অনেকেই আছেন যারা ফিনল্যান্ডে লেখাপড়া শেষ হবার পরেও চাকরি করার জন্য থেকে যেতে চান। ফিনিশ ইমিগ্রেশন নিয়ম অনুযায়ী একজন বিদেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা শেষ হবার পর ফিনল্যান্ডে থাকতে পারবে না। কিন্তু আপনি চাইলে রেসিডেন্স এবং ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন। যদি ফিনিশ ইমিগ্রেশন থেকে আপনার আবেদনটি সফল হয় তাহলে ফিনল্যান্ডে থাকতে পারবেন।
ফিনল্যান্ডের শীর্ষস্থানে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে-
১. আর্কেডা ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স,
২.হেলসিঙ্কি স্কুল অব বিজনেস,
৩. হ্যাম ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স,
৪.কাজানি ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স,
৫.সাতাকুন্তা ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স,
৬.ল্যাপিনরান্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি।
|