মাহমুদুল হাসান
বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-০১ এর মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জন এর অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে এক অভিযোগ পত্র সড়ক জনপদ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে পাঠিয়েছেন সোহেল মিয়া নামে একজন ব্যক্তি। সোহেল মিয়া তার অভিযোগে বলেন, আমিনুল ইসলাম অবৈধভাবে বিআরটিএ-তে বিভিন্ন ধরনের কাজের বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেন এবং তার মাধ্যমে গ্রাহকদের হয়রানি করা হয়।
সোহেল মিয়া তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে, মটরযান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম কোনো ফাইল স্বাক্ষর করেন না যতক্ষণ না তিনি ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ইঞ্জিন পরিবর্তন, চাকা পরিবর্তন কিংবা কালার পরিবর্তন করানোর জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে বড় অংকের ঘুষ দাবি করেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, "যদি গ্রাহক ঘুষ না দেন, তাহলে তাকে অতিরিক্ত হয়রানির শিকার হতে হয়।"
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় আমিনুল ইসলামের পিতার নাম-মোঃ খোরশেদ আলম, মাতার নাম-সাহিদা বেগম, তার ঠিকানা: গ্রাম-শ্রীমঙ্গল (ইসলাম বাগ মোস্তফাপুর), সবুজবাগ, ডাকঘর- মৌলভীবাজার সদর, থানা+জেলা মৌলভীবাজার। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৩৭১৮৯৬৭৯৪০ জন্ম তারিখ ১৮/০২/১৯৮৫ইং তার ঠিকানা: ১৬৩, সেনপাড়া পর্বতা, কাফরুল, ঢাকা। তার টিন নং-১১২০৩৫৩৬৯৮৮৩, কর সার্কেল ৭১, কর অঞ্চল-০৪, ঢাকা।
এছাড়া, আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নতুন গাড়ী রেজিস্ট্রিশন করতে গেলে গাড়ী প্রতি ৩-৫ হাজার টাকা, আনসিন গাড়ী প্রতি ২০০০ টাকা করে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে আরো বলা হয়েছে, তিনি নিরবে ঘুষ গ্রহণ করেন এবং দালালদের মাধ্যমে গ্রাহকদের হয়রানি করে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।
সোহেল মিয়ার অভিযোগে আরও বলা হয় যে, আমিনুল ইসলাম কিছু বছরে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। তার ঢাকা শহরে একাধিক ফ্ল্যাট এবং বাড়ি রয়েছে। এছাড়া, মৌলভী বাজার জেলায় তার একটি বিশাল বাড়ি এবং ৫০টি চা বাগান রয়েছে, যা তিনি অবৈধ ঘুষের টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন।
সোহেল মিয়া তার অভিযোগে সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে অবিলম্বে এই বিষয়ে তদন্ত করার এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, "এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম সড়ক পরিবহন খাত এবং সাধারণ জনগণের জন্য ক্ষতিকর। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জনগণের প্রতি যথাযথ সেবা প্রদান না করে, কর্মকর্তারা এভাবে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।"
এ পর্যন্ত বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঘুষ গ্রহণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের মাধ্যমে সরাসরি সমাধান করার জন্য বিআরটিএ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
এই অভিযোগ সত্যি হলে, এটি বিআরটিএ এবং বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন খাতের জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা। অবৈধ ঘুষ এবং দুর্নীতি সড়ক পরিবহন খাতে স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে। সেতু মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই বিষয়ে তদন্ত এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে সড়ক নিরাপত্তা এবং জনগণের সেবা নিশ্চিত করা যায়।
|