বাসে ওয়েবিল বাতিলের ঘোষণা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির
Date : 11-8-2022
বাসে ওয়েবিল পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে সমন্বয় করা হলেও ওয়েবিলের নাম করে কিছু বাসের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এলো। এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ঢাকা মহানগরী ও এর আশপাশের রুটে চলাচল করা বাসে ওয়েবিল থাকবে না। রাস্তায় চেকার থাকবে না। পারমিট স্টপেজে গাড়ি থামাতে হবে। তবে দুই স্টপেজের মাঝে গাড়ির দরজা বন্ধ রাখা হবে।’ এ ছাড়া বিআরটিএ’র নতুন চার্ট অনুযায়ী ভাড়া নেওয়ার কথা জানিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। নতুন ভাড়ার চার্ট প্রতিটি গাড়িতে দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখতে হবে বলেও জানায় সংগঠনটি। এদিকে, বিআরটিএ’র পুনর্নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে কিনা, সেটি তদারকি করতে মালিকদের সমন্বয়ে ৯টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিম বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে মাঠে থেকে কাজ শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। এর আগে ৬ আগস্ট গণপরিবহনের মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে ভাড়া বাড়িয়ে সমন্বয় করার ঘোষণা দেয় বিআরটিএ। জানানো হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে প্রতি কিলোমিটারে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ, এই দুই মহানগরীর আশপাশের এলাকায় (ডিটিসিএ) ১৭ শতাংশ এবং দূরপাল্লার বাস ভাড়া ২২ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়িয়ে চার্ট করেছে বিআরটিএ। সেই হিসাবে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া আগের চেয়ে কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ২০ পয়সা, ঢাকা-চট্টগ্রামে ২ টাকা ১৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা এবং ডিটিসিএ এলাকায় ২ টাকা ৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৪০ পয়সা করা হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বড় বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া আগেরটাই ১০ টাকা এবং মিনি বাসে ৮ টাকা বহাল রাখা হয়েছে। ওয়েবিল হলো- একটি গাড়ি কোন স্টোপেজ থেকে কখন ছাড়লো, কতজন যাত্রী আছে, হাফ-পাস যাত্রী আছে কিনা, থাকলে কতজন আছেন ইত্যাদি তদারকি করা। মালিকপক্ষের নিয়োগ করা একজন পরিদর্শক এই কাজটি করে থাকেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ওয়েবিলের নির্দিষ্ট কাগজে লিখে দেন। একটি বাসের রুট কয়েকটি পয়েন্টে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটিতে একজন পরিদর্শক বা কর্মী থাকেন। তারা ওয়েবিল খাতায় ওই পয়েন্টে ওই সময়ে যাত্রীর তথ্য লিখে স্বাক্ষর করে দেন। পরে যাত্রী সংখ্যা দিয়ে ওই পয়েন্টগুলো পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়ার অঙ্ক গুণ করে বাস মালিক টাকা বুঝে নেন। একেক পয়েন্ট পর্যন্ত একেক গাড়ির একেক রকম ভাড়া থাকে। কোথাও কম, কোথাও আবার বেশি দেখা যায়। আবার কখনও যাত্রী কম বা বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে গড়ে যাত্রী সংখ্যা ও ভাড়া হিসাব করা হয়। ওয়েবিলের কারণে যাত্রী ভোগান্তির কারণে এর আগেই ওয়েবিল বন্ধের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়। তবে এর পরও অনেকটা নিজেদের সিদ্ধান্তে ওয়েবিল চালু রেখেছিল বাস মালিকরা। তবে এবার তার ওয়েবিল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেন। এক সময় ঢাকার সড়কের ফুটপাতে বুথ বসিয়ে টিকেট বিক্রি করতো গণপরিবহনগুলো। তাতে কোন স্টোটপেজ থেকে কতজন যাত্রী উঠলো, সেটি বোঝা যেতো। এখনও সেই ব্যবস্থা থাকলেও ভিন্ন রূপ নিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ওয়েবিল পদ্ধতি।