বুধবার, জুলাই ২, ২০২৫
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদন্ড   * বন্ধু ইলন মাস্ক এখন ট্রাম্পের শত্রু   * প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী জীনাত রেহানা মারা গেছেন   * জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ আদায় করে ছাড়ব : নাহিদ ইসলাম   * ফোনালাপ ফাঁসের জেরে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাক বরখাস্ত   * প্রধান উপদেষ্টা : স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয় সেই কাজ করছি   * খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব পিনাকীর   * "যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ: ৩০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘিরে মাসুদদের নাম ঘুরছে ফের"   * জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’   * এনজিও চালানো আর সরকার চালানো আর এক না : এম এ আজিজ  

   জাতীয়
সওজ অধিদপ্তরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরাই বহাল
  Date : 20-05-2025


বিশেষ প্রতিনিধি:
দীর্ঘ পনের বছরের বেশী সময় আওয়ামী দুঃশাসনে ভিন্ন মতাবলম্বী মেধাবী কর্মকর্তারা সওজ অধিদপ্তরে অত্যন্ত অবহেলিত ছিলো, গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন থেকে শুরু করে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো সর্বস্তরে বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এ অধিদপ্তরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের দাপটে প্রধান প্রকৌশলীরাও অনেক ক্ষেত্রে অসহায় ছিলো। প্রধান প্রকৌশলীরা চাইলেও আওয়ামী কর্মকর্তাদের মতের বাহিরে গিয়ে ভিন্ন মতের কোন মেধাবী কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করতে পারতো না। ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে নয় মাস পার হলেও  দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরে ফ্যাসিবাদীদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে কিছু কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। কিন্তু সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে তার তেমন কোন ছোঁয়া লাগে নি বললেই চলে। এ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মইনুল হাসান নিজেই জয় বাংলা স্লোগানধারী কর্মকর্তা এবং ছাত্র জীবনে তিনি সক্রিয় আওয়ামী রাজনীতি করে এসেছেন বিধায় বর্তমানে তার দোসরদের ত্রাণকর্তা হিসেবে কাজ করছে বলে সবাই জানে, যে কারণে এ অধিদপ্তরে অনেকটা ৫ই আগস্ট পূর্ববর্তী অবস্থা বিরাজ করছে। মুজিব শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে সওজ অধিদপ্তরের কয়েক কোটি টাকা তার হাত দিয়ে অপচয় হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি সড়ক বিভাগে মুজিব কর্নার প্রতিষ্ঠার নামে সরকারী অনেক অর্থ অপচয় হয়েছে। তাছাড়া তার পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে সড়ক ভবন প্রাঙ্গণে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করে বঙ্গবন্ধুর মুরাল স্থাপন করা হয়। এ প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশে অধিদপ্তরের  প্রথম সারির প্রায় ৫০ জন ঠিকাদার কে কালো তালিকাভুক্ত করেছে, যে কারণে বর্তমানে কোন যোগ্য ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছেনা, ফলে সড়ক নেটওয়ার্ক অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সওজ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের পদসমূহের মধ্যে ঢাকা সড়ক জোন, চট্টগ্রাম সড়ক জোন, কুমিল্লা সড়ক জোন, ময়মনসিংহ সড়ক জোন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ সড়কসার্কেল, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ অতান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া সড়ক ভবন প্রধান কার্যালয়ে প্রশাসন ও সংস্থাপন সার্কেল, প্রকিউরমেনট সার্কেল ও রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল অতি গুরুত্বপূর্ণ। সওজ রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ ব্যয় করা হয়। যে কারণে সওজ প্রকৌশলীদের নিকট এটি ঝুঁকিমুক্ত লাভজনক পদ হিসেবে বিবেচ্য। সে কারণে এই পদটি সব সময় আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের দখলেই ছিলো। উক্ত পদে যিনি বর্তমানে কর্মরত আছে, তিন বছরের বেশী সময় অতিক্রান্ত হলেও অদৃশ্য কারণে তাকে সরানো হচ্ছেনা। সওজ প্রকিউরমেনট সার্কেল এর মাধ্যমে অধিদপ্তরের প্রতি বছরের উন্নয়ন ও মেরামত খাতের সকল দরপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়, যে কারণে প্রধান কার্যালয়ের এ পদটি অতি লোভনীয়, এ পদে যিনি কর্মরত ছিলেন, তাকে সরিয়ে সড়ক গবেষণাগারে পদায়ন করা হলেও তা আই ওয়াশ ব্যতীত আর কিছুই নয় বলে সকলে মনে করে। কিন্তু ৫ই আগস্ট এর পটপরিবর্তনের পর বর্ণিত বেশিরভাগ পদে ফ্যাসিবাদী সরকারের আশীবাদপুষ্ট ব্যক্তিবর্গ এখনও কর্মরত এবং যে কয়েকটি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তাতেও অধিকাংশ ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে। এ যেন “ক” সেটের জায়গায় “খ” সেট। স্বৈরশাসনের পতনের পর ঢাকা সড়ক জোন এবং প্রকিউরমেনট সার্কেল ব্যতীত অন্য
কোন গুরুত্বপূর্ণ পদ অদ্যবধি ফাসিবাদ মুক্ত হয় নি। আবার কোন কোন পদ এক ফ্যাসিবাদের কবল থেকে আরেক ফ্যাসিবাদের স্থলে আরেক ফ্যাসিবাকে পদায়ন করা হয়েছে, যেমন ঢাকা সড়ক বিভাগ ও নরসিংদী সড়ক বিভাগ তার মধ্যে অন্যতম। অদ্যবধি যে সকল পদ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়নি, তার মধ্যে কুমিল্লা, ময়মনসিংহ সড়ক  জোন, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ সড়ক সার্কেল, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর সড়ক বিভাগ,
সওজ রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল, প্রশাসন ও সংস্থাপন সার্কেল অন্যতম। তবে সবচেয়ে বেশী অবাক করা বিষয় হলো বর্তমানে ঢাকার অতি নিকটে একটি গুরুত্বপূর্ণ জোনে কর্মরত একজন ফ্যাসিবাদের দোসর, এক সময় বিএনপি বলে পরিচয় দিতেন এবং গত
আমলে ওবায়দুল কাদের ও কাদেরের স্ত্রী ইশ্রাতুন্নেসা কাদেরের অতি আপনজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা কর্মকর্তা, যিনি গিরগিটির মত রঙ বদলাতে পটু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি আবার প্রধান প্রকৌশলীরও আস্থাভাজন বলে জানাগেছে। স্বৈরাচারের দোসর কর্মকর্তারা বিগত ১৫ বছর সমস্ত সুযোগসুবিধা ভোগ করে অদ্যাবধি বহাল তবিয়তে
গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে আছে, অথচ একই সময়ে বঞ্চিত কর্মকর্তারা এখনও  বঞ্ছিতই থেকে যাচ্ছে, দৃশ্যত কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করে পক্ষান্তরে
ফ্যাসিবাদের পক্ষ নিচ্ছে বলে প্রতীয়মান। যার প্রমাণ বর্তমানে ঢাকা সড়ক সার্কেলের অধীন ঢাকা সড়ক বিভাগ, নরসিংদী সড়ক বিভাগ, রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল, সড়ক ভবনে সম্প্রতি পদায়নকৃত কর্মকর্তাদের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হবে। উপদেষ্টা ও সিনিয়র সচিব এর সততার সুযোগ নিয়ে বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী ফ্যাসিবাদী এ সকল কর্মকর্তাদের রক্ষা করছেন বলে সওজ অধিদপ্তরের সকল পর্যায়ে আলোচনা
রয়েছে, কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। উল্লেখ্য আবুল কালাম আজাদ জিকরুল হাসানাসহ সবুজ উদ্দিন খানও একেই পথের পথিক বলে জানা গেছে। উদাহরণ স্বরুপ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবালের গত ষোল বছরের
বিভিন্ন কর্মস্থলের ফিরিস্তি পর্যালোচনা করলেই সকল কিছু আয়নারমত পরিষ্কার হওয়া যায়। এ কর্মকর্তা এখন আবার নব্য বিএনপি সেজে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়িত হওয়ার সকল কৌশল সম্পন্ন করে রেখেছে এবং রাস্তাও নাকি সগম হয়ে
আছে। বিএনপির জনৈক সিনিয়র নেতার আর্শীবাদে। সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম
পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তাদের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত হলেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের
অভিপ্রায় থেকে কিছু কিছু অসাধু কর্মকর্তা এ ধরণের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ফায়দা আদায় করা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন প্রেক্ষাপটে এসব ফাসিবাদ কর্মকর্তাসহ অন্যান্য আওয়ামী দোসর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা মানে শহীদদের রক্তের সহিত বেঈমানি করা। জরুরী ভিত্তিতে সওজ অধিদপ্তরে ফ্যাসিবাদী, আওয়ামী দোসর কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে ফাসিবাদ মুক্ত করা না হলে জুলাই, আগস্ট শহীদদের প্রতি চরম অবিচার হবে মর্মে সচেতন মহল মনে করে। 



  
  সর্বশেষ
"যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ: ৩০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘিরে মাসুদদের নাম ঘুরছে ফের"
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয়
পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্ব পিডিবি-আদানি
সাংবাদিক আক্তার হোসেন খোকার ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বাবুগঞ্জে মানববন্ধন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

প্রকাশক: রিনা বেগম
প্রধান সম্পাদক : মো: হাবিবুর রহমান
প্রকাশক কতৃক ৫১/৫১ এ পুরানা পল্টন থেকে প্রকাশিত । সোনালী প্রিন্টিং প্রেস ২/১/এ ইডেন ভবন ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত । বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : ৫১/৫১ এ পুরানা পল্টন (৪র্থ তলা) , ঢাকা - ১০০০।
ফোন: ০২২২৩৩৮০৮৭২ , মোবাইল: ০১৭১১১৩৬২২৬