আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে পরিবেশবিনাশী ক্রীড়া আসর। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে পরিবেশবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘সায়েন্টিস্টস ফর গ্লোবাল রেসপনসিবিলিটি’ (এসজিআর)।
তাদের হিসাব অনুযায়ী, ৪৮ দলের এই সম্প্রসারিত বিশ্বকাপে ১০৪টি ম্যাচ আয়োজনের ফলে যে গ্যাস নির্গত হবে তা ৯ মিলিয়নেরও বেশি টন কার্বন ডাই অক্সাইড সমতুল্য (CO₂e)। যা আগের চারটি বিশ্বকাপের গড় নির্গমনের প্রায় দ্বিগুণ।
এমনকি ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেরও চেয়ে অনেক বেশি, যার নির্গমন ছিল সর্বোচ্চ ৫.২৫ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড সমতুল্য।
এসজিআর জানিয়েছে, এই নির্গমন প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন গড় ব্রিটিশ গাড়ি এক বছর চালালে যতটা হয়, তার সমান। এতে করে ২০২৬ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে জলবায়ু-ক্ষতিকর’ টুর্নামেন্ট।
বিশ্বকাপের আকার বৃদ্ধির পাশাপাশি দীর্ঘ ভ্রমণ, বিশেষ করে আকাশপথে যাতায়াতই এর প্রধান কারণ বলে মনে করছেন গবেষকরা।
যদিও সবগুলো ম্যাচ বিদ্যমান স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে, তবু ভৌগোলিক বিস্তৃতির কারণে দূষণের পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্স ফান্ড’ ও ‘স্পোর্ট ফর ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক’-এর সহযোগিতায়।
তিন আয়োজক দেশের বিড বইয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের সম্ভাব্য কার্বন নির্গমন ধরা হয়েছিল ৩.৬ মিলিয়ন টন CO₂e, যখন ম্যাচ সংখ্যা ছিল ৮০টি। সেসময় তারা পরিবেশবান্ধব বিশ্বকাপ আয়োজনের অঙ্গীকারও করেছিল।
ফিফা এখনো এই প্রতিবেদন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে সংস্থাটি ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তবে অতীতে ফিফার পরিবেশবান্ধব দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ২০২৩ সালে সুইস ফেয়ারনেস কমিশন জানায়, কাতার বিশ্বকাপকে ‘কার্বন-নিরপেক্ষ’ বলার দাবি ছিল ‘অভিহিতহীন ও বিভ্রান্তিকর’। ইউরোপের পাঁচটি দেশের অভিযোগের ভিত্তিতে সেই সময় এই রায় দেওয়া হয়।