মোঃ মুসলিম উদ্দিন আহমেদ পিপুল, যিনি আহমেদ পিপুল নামে পরিচিত, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে নিষ্ঠা, সততা ও সত্য অনুসন্ধানের প্রতীক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালে স্টাফ ফিচার রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন আহমেদ পিপুল। পত্রিকা ও সাময়িকীর জন্য গভীর বিশ্লেষণধর্মী ফিচার লেখার মাধ্যমে ধীরে ধীরে তিনি গণমাধ্যমে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেন। ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য স্বীকৃতি লাভ করেন, যা পরবর্তীতে তার পেশাগত উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তোলে। ২০০৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক মানবজমিন-এ স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে রাজনীতি ও অপরাধবিষয়ক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো এর যথার্থতা ও সামাজিক প্রাসঙ্গিকতার জন্য প্রশংসিত হয়ে ওঠে। ২০০৬ সালে তিনি এনটিভিতে স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট হিসেবে যোগ দেন এবং টানা ১৬ বছর অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে তার প্রতিবেদনগুলো জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ গুরুত্ব পায় এবং জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোই তিনি তুলে ধরেননি, তরুণ সাংবাদিকদেরও নৈতিক সাংবাদিকতার চর্চায় অনুপ্রাণিত করেছেন। ২০২৩ সালে আহমেদ পিপুল মিডিয়া টুডে লিমিটেড (এফএম রেডিও)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে বিএসএস ও এমএসএস ডিগ্রি অর্জনকারী আহমেদ পিপুল শিক্ষাক্ষেত্রেও অবদান রেখেছেন। তিনি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করেছেন। যোগাযোগ আচরণ ও সামাজিক মাধ্যমের নাগরিকত্ব নিয়ে তার একাডেমিক প্রকাশনা গণমাধ্যম গবেষণা ও চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে তার অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। আহমেদ পিপুলের অবদান কেবল প্রচলিত সাংবাদিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বর্ণমালা কমিউনিকেশন লিমিটেড-এর ক্রিয়েটিভ হেড হিসেবে তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ৪০০-এর বেশি অডিও-ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি নির্মাণের নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয়ের জন্য অসংখ্য সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন তত্ত্বাবধান করেছেন।
সাংবাদিকতায় তার দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ আহমেদ পিপুল একাধিক সম্মাননা অর্জন করেছেন। ২০০৭ সালে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় প্রদত্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অ্যাওয়ার্ডে তিনি জলাবদ্ধতা নিয়ে যশোরে করা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য প্রথম পুরস্কারে ভূষিত হন। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং এশিয়ান প্যারা গেমস-এ (প্রেস অ্যাটাশে হিসেবে), যা তাকে দেশের এক শক্তিশালী গণমাধ্যম প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরে। তিনি থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নত সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সক্রিয় সদস্য হিসেবে পেশাগত সংগঠনে অবদান রেখে চলেছেন। আহমেদ পিপুল সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগের ক্ষেত্রে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব, যিনি সত্য, ন্যায় এবং সচেতন নাগরিকত্বের চর্চায় নিরলসভাবে কাজ করে নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছেন।