স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকার কদমতলীর রায়েরবাগ মিরাজ নগরে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোকলেছুর রহমানের নির্মাণাধীন ৬ তলা ভবন "মা-মনি টাওয়ার" জনমনে কৌতূহল ও প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। বাড়ির সাইনবোর্ডে তিনি নিজেকে মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি জানান, বাড়ির বৈধতার সকল কাগজপত্র ও ট্যাক্স ফাইল রয়েছে তার নামে। তার স্ত্রীর নামেও ইনকাম ট্যাক্স ফাইল রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, ১০ বছর আগে জমিটি কিনেছিলেন, তখন প্রতি কাঠার মূল্য ছিল ২০-২২ লক্ষ টাকা।
তবে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা গেছে। কখনো তিনি বলেন, ভাই-বোনদের সঙ্গে বাড়ি নির্মাণ করেছেন; আবার কখনো দাবি করেন, এটি তার ও তার স্ত্রীর যৌথ মালিকানাধীন। এই ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য তার সম্পদের প্রকৃত উৎস নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
বর্তমানে ফরিদপুর জেলায় কর্মরত এই পুলিশ কর্মকর্তার শরীয়তপুরে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণের খবরও পাওয়া গেছে। একজন এসআই পদে থাকা কর্মকর্তার পক্ষে এত ব্যয়বহুল সম্পদ অর্জন কীভাবে সম্ভব হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের এসআই পদে বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ১০ম গ্রেডে, যা ১৬,০০০ থেকে ৩৮,৬৪০ টাকা পর্যন্ত। এই বেতনে একজন কর্মকর্তার পক্ষে ঢাকায় ৬ তলা বাড়ি ও গ্রামে ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ করা আর্থিকভাবে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, "একজন এসআই পদে থাকা কর্মকর্তার পক্ষে এত ব্যয়বহুল বাড়ি নির্মাণ কীভাবে সম্ভব হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা চাই, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হোক।"
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদের তদন্ত করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২৩ সালে দুদক গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসআই সুমন কুমার দে`র বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি তার আয়ের উৎসের বাইরে ১৬,৯১,০৮৩ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা গোপন করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, এসআই মোকলেছুর রহমানের সম্পদের উৎস নিয়ে জনমনে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিরসনে দুদকের উচিত বিষয়টি তদন্ত করা। জনগণের আস্থা বজায় রাখতে এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এসআই মোকছেদুর রহমানের সম্পদের উৎস ও বৈধতা তদন্ত করা।