মির্জা আব্দুর রব বুলবুল, চলনবিল প্রতিনিধি ঃ-
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক চলনবিলের বিভিন্ন হাট-বাজার গুলোতে খাজনা আদায়ে নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে যা দেখার কেউ নেই। চলনবিল এলাকার ৯টি উপজেলা হ’ল তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমহর, গুরুদাসপুর, সিংড়া ও আত্রাই। সারা বছর কোন কোন হাট-বাজার গুলোতে সপ্তাহে একদিন অথবা সপ্তাহে দুইদিন গরু,ছাগল, ভেড়া সহ নানা রকমের গবাদী পশু, শাক-সবজি সহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ক্রয়-বিক্রয়ের হাট বসে, হাটে আসা জনগণের অনেকে বলেন হাট-বাজারগুলো ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে ইজারা মুল্যের চেয়ে অতিরিক্ত খাজনা দিতে হয়। ইজারাদের লোকজন হাটের বিভিন্্ন স্থানে টেবিল বসিয়ে খাজনা আদায় করছে। কিন্তু তাদের কাছে কোন ইজারা আদায় করার তালিকা নেই, হাট-বাজার গুলোতে পরিচালনা কমিটির নজরদারি নেই বললেই চলে। শুধু নজরদারির অভাবে হাট-বাজারগুলো সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে দ্বিগুনের চেয়ে বেশি হারে খাজনা আদায় করছে ইজারাদারগণ। তবে বছরের বিশেষ হাট বসে ঈদুল আযহা উপলক্ষে, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কুরবানীর ঈদ উপলক্ষে হাট-বাজার গুলোতে প্রচুর পরিমাণ লোকের সমাগম ঘটে। এ সময়ে হাট-বাজার এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্র/ছাত্রীরা জীবনের ঝূঁকি নিয়ে স্কুল,কলেজ এবং মাদ্রাসায় যাতায়াত করে। স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র/ছাত্রীদের নিরাপদে হাট-বাজার গুলোর সীমানা পার করে দেওয়ার সু-ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। যেদিন হাট বসে সেদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীদের পশুর হাট বসার কারণে অতিরিক্ত লোকের ভীড়ে যাতায়াত করা খুবই কষ্ট সাধ্য। সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ছাত্র/ছাত্রী ও এলাকার সচেতন জনসাধারণ বলেন হাট-বাজার বসার কারণে এ সকল হাটের দিনে এলাকার স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসা বন্ধ থাকে, এতে করে এ এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় দিনদিন পিছিয়ে পড়ছে. যা দেখার কেউ নেই বলে ভুক্তভোগী ছাত্র/ছাত্রী ও সচেতন জনসাধারণ জানান। চলনবিল এলাকার ঐতিহ্যবাহী হাট গুলো হ’ল তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট ও গুল্টা হাট, উল্লাপাড়া উপজেলার গ্যাসের হাট, বোয়ালিয়া হাট,শাহজাদপুর উপজেলার শাহজাদপুর হাট, তালগাছী হাট, ফরিদপুর উপজেলার ফরিদপুর হাট, ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর হাট, চাটমহর উপজেলার চাটমহর রেল স্টেশন হাট, বাজার স্ট্রেশন হাট, গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় হাট, সিংড়া উপজেলার সিংড়ার হাট এবং আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ হাট উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ঈদুল আযহা উপলক্ষে আরোও অনেক গরুর হাট বসেছে এ এলাকায় এ সকল হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। ঈদুল আযহা উপলক্ষে প্রত্যেক হাট ইজারা চুক্তির শর্ত অনুযায়ী হাট সীমানার বাহিরে হাট বসানো হয়েছে এবং ইজারা মূল্যের চেয়ে দ্বিগুনের বেশি খাজনা আদায় করা হচ্ছে যা দেখার কেউ নেই। প্রত্যেক হাটের ইজারাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন হাটের দিনগুলোতে আমরা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী ছাত্র/ছাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে পারে সে দিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি দিয়ে থাকি, খাজনা আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা নীরবতা পালন করেন। এ ব্যাপারে চলনবিল এলাকার সকল উপজেলার স্ব-স্ব নির্বাহী অফিসাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন হাট এরিয়ার বাইরে কোন পশুর হাট বসনো ও অতিরিক্ত খাজনা আদায় সম্পর্কে আমরা অবগত নই, তবে যদি কোন হাট এরিয়ার বাহিরে হাট বসায় এবং ইজারা মুল্যের চেয়ে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে বলে এ প্রতিবেদককে আশ্বাস দেন।